ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২

আধিপত্য বিস্তার ও কথা-কাটাকাটির জেরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে সংগঠনটির দুই কর্মী আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেলে শাহজালাল ও শাহ আমানত হলের সামনে এই ঘটনা ঘটে।

বিবাদমান পক্ষ দুটি হলো সিক্সটি নাইন ও চুজ ফ্রেন্ড উইথ কেয়ার (সিএফসি)। আহত দুজন হলেন ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান ও পালি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী প্লাথন চাকমা। তাঁদের মধ্যে মেহেদী সিক্সটি নাইন ও প্লাথন সিএফসির কর্মী। এই দুজনকে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) পাঠানো হয়েছে।

ছাত্রলীগ ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শহরগামী বিকেল চারটার ট্রেনে দুই পক্ষের কর্মীদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর জের ধরে মঙ্গলবার দুপুরে সিক্সটি নাইনের দুই কর্মীকে ক্যাম্পাসের সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে মারধর করেন সিএফসির নেতা-কর্মীরা। ঘটনা জানাজানি হলে বিকেলে শাহজালাল হলের সামনে সিক্সটি নাইনের নেতা-কর্মীরা জড়ো হন। পরে সিএফসির নেতা-কর্মীরা শাহ আমানত হলে অবস্থান নেন। এ সময় উভয় পক্ষই রামদা, হকিস্টিক ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হলের সামনে মহড়া দেয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষই একে অপরকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরবর্তী সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষকে সরিয়ে দেয়। পক্ষ দুটির মধ্যে সিক্সটি নাইন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এবং সিএফসি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।

এ ঘটনার পর ছাত্রলীগের ছয় কর্মীকে আটক করে পুলিশ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বেলাল উদ্দিন জাহাংগীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদ করতে তাঁদের আটক করা হয়েছে।’ রাতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশ তাঁদের ছেড়ে দিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মশিউর দৌলা রেজা প্রথম আলোকে বলেন, ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত। ক্যাম্পাসে যাঁরা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে, তাদের জন্য জিরো টলারেন্স। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

আহত দুজনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু তৈয়ব প্রথম আলোকে বলেন, দুই শিক্ষার্থী আহত অবস্থায় এসেছিলেন। তাঁদের পিঠে ও হাতে আঘাত থাকায় চমেকে পাঠানো হয়েছে।

এ দিকে সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষই পরস্পরকে দায়ী করেছে। সিক্সটি নাইনের নেতা ও ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মনছুর আলম প্রথম আলোকে বলেন, বিনা উসকানিতে তাঁদের কর্মীকে মারধর করা হয়েছে। তিনি জড়িত ব্যক্তিদের বিচার চান।

সিএফসি পক্ষের নেতা ও সাবেক সহসভাপতি রেজাউল হক প্রথম আলোকে বলেন, ক্যাম্পাসে সিএফসির শক্তি দেখে অনেকেই হিংসা করছে। এ কারণে তাঁদের নেতা-কর্মীর ওপর হামলা চালানো হয়েছে। তবে এ ঘটনা জ্যেষ্ঠ নেতারা বসে সমাধান করছেন।

এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ নিয়াজ মোরশেদ প্রথম আলোকে বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলা মিটমাট করা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি শান্ত।