আদালতে ইজতেমার মতো বিষয় আনা 'লজ্জাজনক'

ইজতেমার মতো বিষয় নিয়ে আদালতে আসা ‘লজ্জাজনক’ উল্লেখ করে সব পক্ষকে শান্তিপূর্ণ অবস্থায় থেকে এক হওয়ার কথা বলেছেন হাইকোর্ট। বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠান নিয়ে করা এক রিট আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল মঙ্গলবার এ কথা বলেন।

বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠানে সহযোগিতার নির্দেশনা চেয়ে গত রোববার রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. ইউনুছ মোল্লা, যা গতকাল শুনানির জন্য ওঠে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শাহ মো. নুরুল আমিন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।

শুনানিতে আইনজীবী শাহ মোহাম্মদ নুরুল আমিন গত ১৮ সেপ্টেম্বর ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জারি করা পরিপত্র ও রিটের আরজি তুলে ধরেন। আইনজীবীর উদ্দেশে আদালত বলেন, ‘ইজতেমার মতো বিষয় নিয়ে আদালতে আসা “লজ্জাজনক”। আপনারা নিজেরা বিভক্ত হলে দ্বীনের প্রচার করবেন কীভাবে? আগে নিজেরা সংশোধন হন এবং নিজেদের মধ্যকার বিভেদ নিরসন করুন। শান্তিপূর্ণ অবস্থায় থেকে এক হন। আপনাদের মধ্যে যদি এ রকম হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের কাছে কী জবাব দেবেন? মানুষ তো তখন বলবে, আগে নিজেরা শুদ্ধ হন, তারপর আমাদের শুদ্ধ করতে আসেন।’

এ সময় শাহ মোহাম্মদ নুরুল আমিন বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব নিরসন সম্ভব না হলে, গত ১৮ সেপ্টেম্বরে জারি করা সরকারি নির্দেশনা অনুসারে আলাদা আলাদাভাবে ইজতেমা পালনের নির্দেশনা চাচ্ছি। তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব নিরসনের চেষ্টা চলছে। বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে দুপক্ষের উপস্থিতিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বুধবার (আজ) একটি জরুরি সভা হওয়ার দিন নির্ধারিত রয়েছে। পরে আদালত ২৭ জানুয়ারি পরবর্তী দিন ধার্য রাখেন।

রিট আবেদনকারী মো. ইউনুছ মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশে তবলিগের কার্যক্রম সুষ্ঠু, সুন্দর ও সুশৃঙ্খলরূপে পরিচালনার জন্য পাঁচ দফা নির্দেশনা দিয়ে ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ধর্ম মন্ত্রণালয় পরিপত্র জারি করে। এই পরিপত্র স্থগিত করে ওই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর আরেকটি পরিপত্র জারি করা হয়। এই পরিপত্রটির কার্যকারিতা স্থগিত চাওয়া হয়েছে এবং পরিপত্রটি কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না—মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে। রিটে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ তিনজনকে বিবাদী করা হয়েছে।