২১ আগস্ট হামলা মামলায় সাবেক দুই আইজিপির জামিন বহাল

দুই সাবেক আইজিপি শহুদুল হক ও আশরাফুল হুদা।
দুই সাবেক আইজিপি শহুদুল হক ও আশরাফুল হুদা।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত পুলিশের সাবেক দুই মহাপরিদর্শক (আইজিপি) শহুদুল হক ও আশরাফুল হুদার জামিন বহাল রয়েছে। হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনে ‘নো অর্ডার’ দিয়েছেন চেম্বার আদালত। আজ বুধবার চেম্বার বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান এ আদেশ দেন। এর ফলে পুলিশের সাবেক ওই শীর্ষ দুই কর্তাকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রইল ও তাঁদের কারামুক্তিতে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তাঁদের আইনজীবী আরশাদুর রউফ।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় করা হত্যা মামলায় দুই বছরের সাজার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে হাইকোর্টে জামিন চান সাবেক ওই দুই কর্তা। শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট তাঁদের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন। এই আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে, যা আজ চেম্বার বিচারপতির আদালতে শুনানির জন্য ওঠে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাসুদ হাসান চৌধুরী।
পুলিশের সাবেক দুই শীর্ষ কর্তার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আরশাদুর রউফ।

আদেশের বিষয়টি জানিয়ে আরশাদুর রউফ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ জামিনযোগ্য। দুই বছরের সাজা হলেও ইতিমধ্যে তারা ১৪ মাস কারা ভোগ করেছেন—এসব যুক্তিতে জামিন আবেদন করা হলে হাইকোর্ট ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছিলেন। একই সঙ্গে দুজনের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশও স্থগিত করেন। চেম্বার বিচারপতি ‘নো অর্ডার’ দেওয়ায় এখন হাইকোর্টের আদেশই বহাল রইল।

অবশ্য অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্টের আদেশের অনুলিপি পেয়ে দুইজনের জামিনের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে নিয়মিত লিভ টু আপিল করা হবে।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দলটির বহু নেতা-কর্মী আহত হন।

১৪ বছর পর গত বছরের ১০ অক্টোবর হামলা মামলার (হত্যা ও বিস্ফোরক) রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও বিএনপির নেতা আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অপর ১১ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ৫২ আসামির মধ্যে অন্য মামলায় জামায়াতে ইসলামীর নেতা আলী আহসান মুহাম্মাদ মুজাহিদ, হুজি নেতা মুফতি হান্নানসহ তিনজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। মামলার আসামি তারেক রহমানসহ পলাতক ১৮ জন।

ওই হামলা মামলায় আটজন পুলিশ কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়। তাঁরা হলেন পুলিশের সাবেক তিন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) আশরাফুল হুদা (গ্রেনেড হামলার সময় তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার ছিলেন), শহুদুল হক ও খোদা বকশ চৌধুরী, সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি খান সাইদ হাসান ও মো. ওবায়দুর রহমান, জোট সরকারের আমলে মামলার তিন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান ও এএসপি আবদুর রশিদ।