মির্জা ফখরুলের সামনে দুই নেতার বিতণ্ডা

কী নিয়ে এই বিতণ্ডা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
কী নিয়ে এই বিতণ্ডা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উপস্থিতিতে বগুড়া জেলা বিএনপির শীর্ষ দুই নেতার বাগ্‌বিতণ্ডা হয়েছে। আজ বুধবার বেলা একটার দিকে বগুড়ার পাঁচতারকা হোটেল মম ইনের লিফটে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ফখরুলের উপস্থিতিতেই জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন বিতণ্ডায় জড়ান।

বিএনপির মহাসচিব বগুড়া-৬ (সদর) আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন মির্জা ফখরুল। আজ ঠাকুরগাঁও থেকে ঢাকায় ফেরার পথে বগুড়ার ওই পাঁচতারকা হোটেলে যাত্রাবিরতির সময় দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

লিফটে অবস্থানকালে হঠাৎ করেই কিছু একটা নিয়ে বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলামের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের।
লিফটে অবস্থানকালে হঠাৎ করেই কিছু একটা নিয়ে বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলামের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের।

প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেলা ১২টার কিছু আগে বগুড়া শহরতলির নওদাপাড়া এলাকায় পাঁচতারকা হোটেল মম ইন এ পৌঁছান। কিছু সময় বিশ্রাম শেষে হোটেলের সাত তলায় কনফারেন্স রুমে মতবিনিময় সভায় যোগ দিতে লিফটে ওঠেন। এ সময় তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী, নিরাপত্তা কর্মী ছাড়াও ছিলেন বগুড়া পৌরসভার মেয়র একে এম মাহবুবুর রহমান, বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, সহসভাপতি আলী আজগর তালুকদারসহ কয়েকজন নেতা। সেখানে উপস্থিত দুজন নেতা বলেন, লিফটে ওঠার পর সাইফুল ইসলাম মহাসচিবের আসার বিষয়টি তাঁকে কেন জানানো হয়নি—সেই বিষয়ে জয়নাল আবেদীনের কাছে জানতে চান। এ নিয়ে দুই নেতার মধ্যে বিতণ্ডা বাঁধে। একপর্যায়ে সাইফুল ইসলাম উত্তেজিত হয়ে পড়লে মির্জা ফখরুল তাঁকে চুপ থাকতে বলেন এবং জ্যাকেটের সামনের অংশ টেনে ধরে সাইফুলকে থামানোর চেষ্টা করেন।

বগুড়া শহরতলির মমো ইন হোটেলের লিফটে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলামের জ্যাকেটের কলার ধরে মির্জা ফখরুল।
বগুড়া শহরতলির মমো ইন হোটেলের লিফটে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলামের জ্যাকেটের কলার ধরে মির্জা ফখরুল।

জানতে চাইলে সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মহাসচিবের কর্মসূচির ব্যাপারে আমার সঙ্গে আগে থেকে কেন কথা বলা হয়নি, সে বিষয়টি জেলা সম্পাদক জয়নাল আবেদীনের কাছে জানতে চেয়েছিলাম। সে সময় মহাসচিব আমাকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, “সাইফুল তুমি থাম তো”!’
জয়নাল আবেদীন বলেন, দলীয় মহাসচিবের সামনে জেলা সভাপতির এ ধরনের আচরণ দলীয় শৃঙ্খলার পরিপন্থী। নির্বাচনের আগেও মহাসচিবের উপস্থিতিতে হট্টগোল করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৪ ডিসেম্বর বগুড়ার শহীদ টিটু মিলনায়তনের কর্মিসভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উপস্থিতিতে হট্টগোল হয়। সেখানে বিএনপির মহাসচিবের সঙ্গে সাইফুল-সমর্থিত এক নেতার তর্কে জড়ানোর ভিডিও ভাইরাল হয়।
এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘লিফটে ওঠার পর বগুড়া জেলা বিএনপির সম্পাদক জয়নাল আবেদীনের সঙ্গে সভাপতি সাইফুল ইসলামের তর্ক বাধে। আমি সাইফুল ইসলামকে থামিয়ে দেওয়ার জন্য জ্যাকেটে হাত দিয়ে বলেছি, এখানে মিডিয়ার লোকজন রয়েছে, তোমরা থাম। এর বেশি কিছু হয়নি।’

লিফটে থাকা অন্যরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন। তবে একপর্যায়ে সাইফুলের জ্যাকেটের কলার চেপে ধরেন মির্জা ফখরুল।
লিফটে থাকা অন্যরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন। তবে একপর্যায়ে সাইফুলের জ্যাকেটের কলার চেপে ধরেন মির্জা ফখরুল।

সাইফুল ইসলাম পরে প্রথম আলো অনলাইনে প্রকাশিত ‘বগুড়ার নেতার সঙ্গে বিতণ্ডায় মির্জা ফখরুল’ শীর্ষক প্রতিবেদনটির প্রতিবাদ জানান। বগুড়া জেলা বিএনপির প্যাডে লিখিত ওই বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। বিবৃতিতে সাইফুল বলেন, বিএনপির মহাসচিব একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তাঁর সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডার প্রশ্নই আসে না। তাঁকে আমরা সবাই শ্রদ্ধা করি। যে খবর পরিবেশন করা হয়েছে তা সঠিক নয়।