চাকসু নির্বাচনের দাবিতে ছাত্র ইউনিয়নের মানববন্ধন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনসহ চার দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে ছাত্র ইউনিয়ন। আজ বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা ভাস্কর্যের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন সংগঠনটির বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অর্ধশত নেতা-কর্মী।

কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, চাকসু নির্বাচন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষার্থীর অধিকার। দীর্ঘ ২৯ বছর নির্বাচন বন্ধ রয়েছে। প্রশাসন চাইলে এ নির্বাচন দ্রুত কার্যকর করা সম্ভব। কিন্তু প্রশাসনের সদিচ্ছা নেই। নির্বাচন বন্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে ছাত্ররা প্রতিনিধিত্ব করতে পারছেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রগতিশীলতার বিপরীতে মৌলবাদী রাজনীতির চর্চা হচ্ছে। এ অবস্থায় দ্রুত চাকসু নির্বাচন দিতে হবে। নয়তো প্রশাসনকে এর ব্যর্থতার দায় স্বীকার করতে হবে।

ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক গৌরচাঁদ ঠাকুরের সঞ্চালনায় ও সভাপতি ধীষণ প্রদীপ চাকমার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবা জাহান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৌরভ ধর, দপ্তর সম্পাদক জিতায়ন চাকমা, সমাজকল্যাণ-বিষয়ক সম্পাদক প্রত্যয় নাফাক প্রমুখ।

মানববন্ধনে ধীষণ প্রদীপ চাকমা বলেন, চাকসু কার্যকর না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন স্বৈরাচারী পদক্ষেপ নিতে পারছে। উপাচার্য নির্বাচনে ছাত্রদের মতামত দেওয়ার সুযোগ থাকছে না। তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা কোনো জায়গায় তাঁদের মতামত দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না।

তাই প্রশাসন অন্যায়ভাবে নামে-বেনামে বিভিন্ন অবৈধ ফি চাপিয়ে দিচ্ছে এবং গবেষণা খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দিচ্ছে না। এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পারে চাকসু নির্বাচন। তাই কালক্ষেপণ না করে চাকসু নির্বাচন দিতে হবে।

মানববন্ধনে ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা চার দফা দাবি তুলে ধরে। দাবিগুলো হলো—ভোটার তালিকা হালনাগাদ, গঠনতন্ত্রের যুগোপযোগী সংশোধন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা ও নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা।

সর্বশেষ চাকসু নির্বাচন হয় ২৯ বছর আগে। ১৯৯০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচনের সময় দেশের রাষ্ট্রপতি ছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। নির্বাচনের ১০ মাস পর এরশাদের পতন হয়। এর পরে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে কয়েক দফায় ক্ষমতার পালাবদল ঘটেছে। তবে কেউই চাকসু নির্বাচন নিয়ে মাথা ঘামায়নি। এই নির্বাচনের দাবিতে ছাত্রলীগসহ অন্যান্য ছাত্রসংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরে কর্মসূচি পালন করে আসছে। সর্বশেষ ১৪ জানুয়ারি মানববন্ধন করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এর আগে চাকসু নির্বাচনের দাবিতে ২০১৫ সালের ২৭ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিয়েছিল ছাত্রলীগ। আর ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয় রেলস্টেশন চত্বরে মানববন্ধন করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট।