বড় ফ্লাইট বন্ধ, সংকটে ওমানপ্রবাসীরা

ওমানের মাসকাট থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে সপ্তাহে তিন দিন সুপরিসর বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর এবং বাকি চার দিন ছোট উড়োজাহাজ বোয়িং ৭৩৭ দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করে আসছিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। কিন্তু প্রায় ছয় মাস ধরে এই রুটে শুধু বিমানের বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজ চলাচল করছে। এর ফলে লাশ ও অসুস্থ যাত্রী পরিবহন এবং লাগেজ জটিলতায় পড়তে হচ্ছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের।

এই সংকট নিরসনে অবিলম্বে সুপরিসর উড়োজাহাজ দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশিদের সংগঠন চট্টগ্রাম সমিতি ওমান।

সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ ইয়াছিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক তাপস বিশ্বাস এক বিবৃতিতে বলেন, ওমানে প্রায় ৮ লাখ বাংলাদেশি বসবাস করছেন। যাত্রী চাহিদা থাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম-মাসকাট রুটে সপ্তাহে তিন দিন ৪১৯ আসনের বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর এবং বাকি চার দিন ১৬২ আসনের বোয়িং ৭৩৭ চলাচল করে থাকে। প্রতিবছর হজ মৌসুমে হজযাত্রীদের সুবিধার্থে এই রুটে বোয়িং ৭৭৭ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়। তবে হজ শেষে সেটি আবার আবার চালু করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছর হজের সময় মধ্য জুলাই থেকে মাসকাট-ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে বোয়িং ৭৭৭ বন্ধ রাখা হয়। ফিরতি হজ ফ্লাইট ২৫ সেপ্টেম্বর শেষ হলেও বিমানের বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ এখন আর ওমানে আসছে না। তাঁদের অভিযোগ, বিমান কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিলেতে কার্যত তারা তা বাস্তবায়ন করছে না।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, প্রতি মাসে ওমান থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ৭০টির মতো লাশ দেশে আসে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বিমান বিনা মূল্যে এসব লাশ পরিবহন করে দেশে নিয়ে আসে। কিন্তু বর্তমানে প্রতিদিনই বোয়িং ৭৩৭ চলাচল করায় সে সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে। এ কারণে ওমান থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের লাশ পাঠাতে দেরি হচ্ছে। বিদেশি বিমান সংস্থার মাধ্যমে লাশ পাঠাতে হলে মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয়। এতে সেখানকার বিভিন্ন হাসপাতালের হিমঘরে প্রবাসীদের লাশের সংখ্যা বাড়ছে। অন্যদিকে অসুস্থ প্রবাসীদেরও দেশে ফিরতে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ওমানের প্রায় ৮ লাখ প্রবাসীর ৬৫ ভাগই চট্টগ্রাম অঞ্চলের বাসিন্দা। এর ফলে অন্যান্য বিমান সংস্থার মাধ্যমে লাশ পাঠানো হলেও সেগুলো ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পাঠাতে হয়।

এদিকে বিমান সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে ওমান থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে সুপরিসর ৭৭৭-৩০০ উড়োজাহাজ দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে না। আপাতত বোয়িং ৭৩৭-ই সপ্তাহে সাত দিন এই রুটে চলাচল করবে।

বিমানের পরিচালক (মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস) আশরাফুল আলম আজ শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, বিমানের অন্যান্য রুটে ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে বাণিজ্যিকসহ অনেক বিষয় বিশ্লেষণ করা হয়। এর মধ্য এয়ারক্রাফটের বিষয়ও রয়েছে। তবে বড় এয়ারক্রাফট দিয়ে ওমান থেকে ফ্লাইট পরিচালনা করতে বিমানের ইচ্ছা আছে।