প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য 'অপরাধবোধ' থেকে, মনে হয়েছে ফখরুলের

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ও  বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতীয় ঐক্যের আহ্বান ‘কথার কথা’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি মনে করেন, প্রধানমন্ত্রী ‘গিল্টি কনসায়েন্স’ (অপরাধবোধ) থেকে বক্তব্য দিয়েছেন।

আজ শনিবার সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ফখরুল এই মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রীর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন,‘জাতীয় ঐক্যের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী যে ডাক দিয়েছেন সেটাকে তো মেনে নেওয়ার কোনো কারণ নেই। বিএনপির সঙ্গে যে সংলাপ হলো তখন প্রধানমন্ত্রী যে কথাগুলো ‍দিয়েছিলেন, সেই কথা উনি রাখতে পেরেছেন? একটাও রাখতে পারেননি অর্থাৎ রাখেননি। তিনি বলেছেন, গ্রেপ্তার হবে না, নতুন কোনো মামলা হবে না এবং একটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা হবে- একটাও রাখেননি।’

ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে কথাগুলো বলছেন, এগুলো কথার কথা, এগুলো উনি সব সময় বলেন।তিনি বলেন, বিএনপি তো ফলাফলই প্রত্যাখ্যান করেছে। সেখানে নতুন করে শপথ নেওয়া ও সংসদে যাওয়া- এই বিষয়ে তো কোনো প্রশ্নই উঠে না।

টানা তৃতীয়বার সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। সেখানে তিনি জাতীয় ঐক্য ও বিএনপিকে সংসদে আসার আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য আমি শুনেছি। প্রথমে যেটা মনে হয়েছে উনি (প্রধানমন্ত্রী) একটা গিল্টি কনসেস (অপরাধবোধ) থেকে বক্তব্যটা রেখেছেন। কেন জানি না মনে হয়েছে যে, তাঁর (প্রধানমন্ত্রী) কোথাও একটা মনে হচ্ছে যে, বিষয়টা ঠিক হয়নি। একটা ব্যাখ্যা দেওয়া প্রয়োজন। সেই ব্যাখ্যা উনি দিয়েছেন। কেন বিএনপি ভালো করতে পারল না, কেন তাঁরা (আওয়ামী লীগ) এত ভালো করল। যেটা চিন্তাভাবনা থেকেই বলেছেন।’

বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করেন, ‘ভয়ে প্রকৃত ঘটনায় কেউ যেতে চাচ্ছে না। মিডিয়াও বলছে না। অন্যান্যরাও সহজে বলতে ভয় পাচ্ছে। কিন্তু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যে মিডিয়া, পলিটিক্যাল এরিয়া, বিভিন্ন দেশগুলো থেকে যে সমস্ত বক্তব্য এসেছে, যে সমস্ত রিপোর্ট এসেছে তাতে করে এটা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে, এই নির্বাচন কোনো নির্বাচনই হয়নি। এটা একটা কঠিন তামাশা হয়েছে জাতির সঙ্গে। যে কথাটা আমি বারবার বলছি, জাতির সঙ্গে ক্রুয়েল মকারী (নিষ্ঠুর মশকরা)।’ তিনি বলেন, ‘এ নির্বাচন বাংলাদেশের বড় রকমের ক্ষতি করে দিয়েছে দীর্ঘস্থায়ীভাবে। এই নির্বাচনের ফলে নির্বাচন প্রতিষ্ঠানের ওপর আস্থা জলে গেল, এই নির্বাচনের ফলে নির্বাচন কমিশনের ওপরে আস্থা চলে গেল, এই নির্বাচনের ফলে রাষ্ট্রের ওপরে আস্থা চলে যাচ্ছে এ জন্য যে রাষ্ট্রযন্ত্রগুলোকে ব্যবহার করা হয়েছিল, বিভিন্ন এজেন্সিগুলোকে ব্যবহার করা হয়েছিল।’

মির্জা ফখরুল আরও অভিযোগ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী ইশতেহারে, কাজের যে ফিরিস্তি দিয়েছেন তাতে তো বিরাট গরমিল রয়েছে। এই যে উন্নয়নের কথা বলা হচ্ছে এটা পুরোপুরি তো ধোঁকার উন্নয়ন। কিছু মানুষ বড় লোক হচ্ছে, ধনী হচ্ছে। পত্রিকায় রিপোর্টও এসেছে যে, বাংলাদেশের ধনীর সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। আর গরিব আরও গরিব হচ্ছে।