স্বর্ণের চেইন, ছাত্রলীগ নেতা ও একজন এসআই

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এক নারীর স্বর্ণের চেইন ছিনতাইকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাকে আটকের ঘটনায় পুলিশের এক উপপরিদর্শককে (এসআই) পিটিয়ে তাঁর পিস্তল ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। পরে ছিনিয়ে নেওয়া গুলিভর্তি পিস্তলটি ফেরত দেওয়া হয়। আর গুরুতর আহত ওই পুলিশ সদস্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় রোববার সকালে পুলিশ বাদী হয়ে সাতজনের নামে মামলা করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় রূপগঞ্জ উপজেলার বলাই খাঁ এলাকার মাহমুদ হোসেন ও তাঁর স্ত্রী মৌটুসী আমলাব এলাকা দিয়ে নিজ বাড়িতে আসছিলেন। তাঁরা শিংলাব এলাকায় এলে একদল ছিনতাইকারী তাঁদের আটক করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। এ সময় মৌটুসীর গলায় থাকা একটি স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরে স্বামী-স্ত্রী ভুলতা পুলিশ ফাঁড়িতে এসে ছিনতাইয়ের বিষয়ে অভিযোগ করেন। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে রাত সাড়ে ৮টার দিকে রূপগঞ্জ থানার ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) নাদিরুজ্জামান, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রাশেদ, এ টি এস আই ফারুক ও কনস্টেবল কবির ঘটনাস্থলে গিয়ে সন্দেহভাজন হিসেবে এক যুবককে আটক করেন। এ সময় ভুলতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি হামজালা বাধা দেন। পুলিশ ছাত্রলীগের নেতা হামজালাকে আটক করে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁর লোকজন এসআই নাদিরুজ্জামানের ওপর হামলা চালায়। এ সময় বাঁশ দিয়ে তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় ও লাঠিপেটা করা হয়। একপর্যায়ে নাদিরুজ্জামানের কোমরে থাকা গুলিভর্তি পিস্তলটি ছিনিয়ে নেওয়া হয়। উপস্থিত অন্য পুলিশ সদস্যরা গুরুতর আহত অবস্থায় এসআই নাদিরুজ্জামানকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।


এ ঘটনায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশসহ (ডিবি) ও থানা-পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থল ও এর আশপাশের এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তিনজনকে আটক করে। পরে পুলিশ প্রশাসনের চাপের মুখে ছিনিয়ে নেওয়া গুলিভর্তি পিস্তলটি ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এ দিকে ঘটনার পর থেকেই পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ হক প্রথম আলোকে বলেন, ধস্তাধস্তিকালে খোয়া যাওয়া গুলিভর্তি পুলিশের পিস্তলটি ঘটনাস্থলের পাশে কচুরিপানার ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে হামজালাসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে আহত এসআই নাদিরুজ্জামান বাদী হয়ে মামলা করেছেন।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে জানান, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত ভুলতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি হামজালার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান সজীব বলেন, এ ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না।