অনিয়ম উদঘাটন এবং দালাল গ্রেপ্তার

কেরাণীগঞ্জের ইকুরিয়ায় বিআরটিএ কার্যালয়ে অভিযানকালে দুদক কর্মকর্তারা। ছবি: সংগৃহীত
কেরাণীগঞ্জের ইকুরিয়ায় বিআরটিএ কার্যালয়ে অভিযানকালে দুদক কর্মকর্তারা। ছবি: সংগৃহীত

দেশের চারটি জেলায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) কার্যালয়ে একযোগে আকস্মিক অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ রোববার সকাল থেকে সংস্থাটি এ অভিযান চালায়।

দুদক জানিয়েছে, অভিযানের সময় রেজিস্ট্রেশন সনদ, ফিটনেস সনদ ও ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার প্রতিটি ধাপে বিপুল পরিমাণ অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে তারা। এ সময় ঢাকায় এক দালালকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হয়।
দুদকের জনসংযোগ বিভাগ জানিয়েছে, সংস্থার অভিযোগ কেন্দ্রে (১০৬) দেশের বিভিন্ন জেলার বিআরটিএ কার্যালয়ে অনিয়মের অভিযোগ আসায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন সনদ, ফিটনেস সনদ ও ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানে অনিয়ম ও ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ পেয়ে ঢাকার কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়া, খুলনা, সিলেট ও পাবনা কার্যালয়ে দুদকের চারটি দল একযোগে আকস্মিক অভিযান পরিচালনা করে।
দুদকের সহকারী পরিচালক জাহিদ কালাম ও উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহাজাহান মিরাজের সমন্বয়ে পুলিশসহ ছয় সদস্যের একটি দল বিআরটিএর ইকুরিয়া কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন সনদ, ফিটনেস সনদ ও ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানের প্রতিটি ধাপে বিপুল পরিমাণ অনিয়মের প্রমাণ পায়। দুদকের উপস্থিতি টের পেয়ে সেখানে অবস্থানরত দালালেরা পালিয়ে গেলেও দুদক দলটি টাকাসহ হাতেনাতে এক দালালকে আটক করে। পরে বিআরটিএর ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ওই দালালকে ৮ হাজার টাকা জরিমানা এবং ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

দুদকের আরেকটি দল পাবনা বিআরটিএ অফিসে অভিযান চালাতে গেলে সেখানে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পায়নি। খুলনা ও সিলেট কার্যালয়ে দুদকের দল দুটি বিশৃঙ্খলা ও অনিয়মের চিত্র উদ্‌ঘাটন করে।
এসব অভিযানে যানবাহন রেজিস্ট্রেশন এবং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য সেবাগ্রহীতাদের দীর্ঘ লাইন থাকলেও অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে লাইন ভঙ্গ করে দ্রুত সেবা নেওয়া এবং ফিটনেস যাচাই না করেই গাড়ির ফিটনেস সনদ দেওয়ার চিত্র দেখা যায়। দুদকের হস্তক্ষেপে তাৎক্ষণিকভাবে সুশৃঙ্খল পরিবেশে গাড়ির ফিটনেস দেওয়া নিশ্চিত করা হয়। দুদকের পক্ষ থেকে উপস্থিত নাগরিকদের কোনো ধরনের ঘুষ লেনদেন ছাড়া সেবা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়। কোনো ধরনের দুর্নীতি বা হয়রানির শিকার হলে তাৎক্ষণিকভাবে দুদক হটলাইন ১০৬-এ জানানোর অনুরোধ করা হয়।
অভিযান সম্পর্কে দুদক এনফোর্সমেন্ট দলের সমন্বয়ক ও সংস্থার মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী বলেন, ‘বিআরটিএর শৃঙ্খলা ফিরে না এলে দুদক সরাসরি দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ নেবে।’