শেরপুরে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে ছাত্রলীগের মারধর

শেরপুরের শ্রীবরদীতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বাড়িতে অভিযানের জের ধরে পুলিশের দুই কর্মকর্তাকে মারধর করা হয়েছে। ছাত্রলীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা এই মারধর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে আহত হয়েছেন শ্রীবরদী থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আবদুল হান্নান ও রফিকুল ইসলাম। রোববার রাতে শ্রীবরদী বাজারের চৌরাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় পুলিশ শ্রীবরদী উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়াউল হককে গ্রেপ্তার করেছে। আর আহত এএসআই আবদুল হান্নান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

পুলিশ, মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার দুপুরে শ্রীবরদী উপজেলার টেঙ্গরপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠান চলাকালে আকস্মিকভাবে কয়েকজন পরীক্ষার্থীর ওপর হামলা করেন ছাত্রলীগের কয়েক জন কর্মী। এতে বিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট কেবিনেটের সভাপতি, এসএসসি পরীক্ষার্থী মেহেদী হাসানসহ চারজন ছাত্র আহত হয়। আহত মেহেদীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ঘটনাটি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শ্রীবরদী থানার পুলিশকে জানালে তাৎক্ষণিকভাবে থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আবদুল হান্নানের নেতৃত্বে পুলিশের সদস্যরা উপজেলার টেঙ্গরপাড়া ও ভায়াডাঙ্গা এলাকায় গিয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বাড়িতে অভিযান চালান। তবে ওই সময় পুলিশ কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করতে পারেনি।


পরে রাত আটটার দিকে এএসআই আবদুল হান্নান ও রফিকুল ইসলাম নিয়মিত টহলের অংশ হিসেবে শ্রীবরদী বাজার এলাকায় যান। এ সময় ছাত্রলীগের ২০-২৫ জন নেতা-কর্মী তাঁদের পথ রোধ করেন এবং ছাত্রলীগের কর্মীদের বাড়িতে অভিযানের কারণ জানতে চান। এ নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তার ওপর চড়াও হয়ে তাঁদের বেদম মারধর করেন। এতে পুলিশ কর্মকর্তা হান্নান ও রফিকুল আহত হন। খবর পেয়ে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুজনকে উদ্ধার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় পুলিশ ছাত্রলীগের কর্মীদের ধাওয়া দিলে তাঁরা পালিয়ে যান। আতঙ্কে বাজারের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। পরে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়াউল হককে গ্রেপ্তার করে।

শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রুহুল আমিন তালুকদার সোমবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, এই ঘটনায় থানার এএসআই রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ছাত্রলীগের নেতা জিয়াউল হকসহ ১২ জনের নাম সুনির্দিষ্ট করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৮-১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। গ্রেপ্তার জিয়াউল হককে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মেরাজউদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুলিশ কর্মকর্তারা মারধরের শিকার হয়েছেন, এ ঘটনা সত্য। তবে এর সঙ্গে ছাত্রলীগের কোনো নেতা-কর্মী জড়িত নন। বহিরাগত বা আওয়ামী লীগ নামধারী কেউ এই ঘটনা ঘটাতে পারে।’