কাটা গেল এক দিনের বেতন

>
  • শিক্ষকেরা নির্ধারিত সময়ে কর্মস্থলে আসেন না
  • চট্টগ্রামের দুটি প্রাথমিক স্কুলের ১০ শিক্ষকের এক দিনের বেতন কাটার সিদ্ধান্ত
  • শিক্ষকদের ঠিক সময়ে উপস্থিত থাকতে নির্দেশনা

নির্ধারিত সময়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা চট্টগ্রামের দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষকের এক দিনের বেতন কাটার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত রোববার আকস্মিক পরিদর্শনে গিয়ে শিক্ষকদের কর্মস্থলে পাননি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। এরপর এসব শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। পাশাপাশি শিক্ষকদের যথাসময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকতে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

বিষয়টি প্রথম আলোর কাছে নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাসরিন সুলতানা। তিনি বলেন, নগরের কাট্টলী নুরুল হক চৌধুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নয়জন এবং সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের এক দিনের বেতন কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাঁদের চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন থেকে এই টাকা কাটা হবে।

চট্টগ্রামের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে শিক্ষকেরা নির্ধারিত সময়ে কর্মস্থলে আসেন না—এমন খবরে গত রোববার নগর, সীতাকুণ্ড ও মিরসরাইয়ের পাঁচটি বিদ্যালয়ে আকস্মিক পরিদর্শন করেন দুদক চেয়ারম্যান। বিদ্যালয়ের কার্যক্রম সকাল ৯টায় শুরু হলেও ৯টা ১৩ মিনিটেও নগরের কাট্টলী নুরুল হক চৌধুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১১ শিক্ষকের ৯ জনকেই পাননি তিনি। এরপর সকাল সাড়ে নয়টার দিকে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে গিয়ে একজন শিক্ষককে কর্মস্থলে পাননি দুদক চেয়ারম্যান।

যথাসময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হলে শাস্তি
এদিকে দুদক চেয়ারম্যানের পরিদর্শনের পর শিক্ষকদের যথাসময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকতে নির্দেশনা জারি করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। গত মঙ্গলবার এ–সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসরিন সুলতানা স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষকদের যথাসময়ে বিদ্যালয়ে আন্তরিক ও স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি একান্ত প্রয়োজন। কিন্তু পরিদর্শনকালে কখনো কখনো শিক্ষকদের যথাসময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকতে দেখা যায় না। এতে বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ অবস্থায় সব শিক্ষককে নিয়মিত যথাসময়ে উপস্থিতি নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিবিড় পরিদর্শনসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নিতে বিজ্ঞপ্তিতে অনুরোধ করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয় কোনো শিক্ষককে যথাসময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত পাওয়া না গেলে বিধি অনুযায়ী প্রশাসনিক ও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসব বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাসরিন সুলতানা বলেন, ‘শিক্ষকেরা যাতে যথাসময়ে কর্মস্থলে উপস্থিত হন—সে বিষয়টি আমরা জোরদারভাবে নিশ্চিত করতে মাঠে নেমেছি। আগে দিনের যেকোনো একসময়ে বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে যেতেন আমাদের কর্মকর্তারা। এখন তার বদলে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরুর সময়ে তাঁরা পরিদর্শনে যাবেন। যথাসময়ে শিক্ষকদের কর্মস্থলে পাওয়া না গেলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’