পোশাকশ্রমিকদের ওপর নিপীড়ন বন্ধের দাবি

বাংলাদেশে পোশাকশ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি, নিরাপদ কর্মপরিবেশ এবং বেতনবৈষম্য নিরসনের যে দাবি, তার প্রতি সমর্থন প্রকাশ এবং শ্রমিকদের ওপর চলমান নিপীড়ন বন্ধের দাবি জানাতে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। ছবি: আয়োজকদের সৌজন্যে
বাংলাদেশে পোশাকশ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি, নিরাপদ কর্মপরিবেশ এবং বেতনবৈষম্য নিরসনের যে দাবি, তার প্রতি সমর্থন প্রকাশ এবং শ্রমিকদের ওপর চলমান নিপীড়ন বন্ধের দাবি জানাতে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। ছবি: আয়োজকদের সৌজন্যে

সাম্প্রতিক বিক্ষোভের জের ধরে বাংলাদেশে পোশাকশ্রমিকদের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ও নিপীড়নের যেসব ঘটনা ঘটছে, তা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠনের নেতারা। গতকাল বুধবার যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তাঁরা এ দাবি জানান।

বিক্ষোভ কর্মসূচি সামনে রেখে দেওয়া এক বিবৃতিতে টিইউসির জেনারেল সেক্রেটারি ফ্রানসেস ওগ্র্যাডি বলেন, ‘বাংলাদেশের সরকার শ্রমিকদের অ্যাসোসিয়েশন করার অধিকার নিয়ে বেশ কথার খই ফুটায়। কিন্তু বাস্তবতা হলো, নিজেদের অধিকারের দাবিতে অ্যাসোসিয়েশন কিংবা বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার কারণে দেশটির শ্রমিকদের চাকরিচ্যুত এবং হামলার শিকার হতে হয়।’

লেবার বিহাইন্ড দ্য লেভেল-এর ডোমিনিক মুলার বলেন, রানা প্লাজার মতো ভয়াবহ দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধে ‘বাংলাদেশ অ্যাকর্ড’-এর কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। কিন্তু শ্রমিকদের ওপর চলমান নিপীড়নের ঘটনায় স্পষ্ট হয়েছে যে, কারখানার নিরাপত্তা বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার আগে সরকারি আচরণের কতটা পরিবর্তন প্রয়োজন।

বাংলাদেশে পোশাকশ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি, নিরাপদ কর্মপরিবেশ এবং বেতনবৈষম্য নিরসনের যে দাবি, তার প্রতি সমর্থন প্রকাশ এবং শ্রমিকদের ওপর চলমান নিপীড়ন বন্ধের দাবি জানাতে ওই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। লেবার বিহাইন্ড দ্য লেভেল, টিইউসি, ইউনিসন এবং ওয়ান অন ওয়ান্ট যৌথভাবে এই বিক্ষোভের আয়োজন করে। একই দিন সংগঠনগুলোর উদ্যোগে স্কটল্যান্ডের এডিনবারা শহরেও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

লন্ডনে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে বলা হয়, সম্প্রতি মজুরি বৃদ্ধি ও বেতনবৈষম্য নিরসনের দাবিতে বাংলাদেশে শ্রমিকেরা কর্মবিরতিতে যায় এবং বিক্ষোভ করে। পুলিশের বলপ্রয়োগ ও নিপীড়নের মাধ্যমে তাদের থামিয়ে দেওয়া হয়। এতে একজন শ্রমিকের প্রাণহানির পাশাপাশি অনেকেই আহত হয়েছে। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শ্রমিকদের ওপর নিপীড়ন এখনো অব্যাহত আছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ এক হাজারের বেশি শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করেছে। শ্রমিক ইউনিয়নের প্রতিনিধিসহ বহু শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ হাজির করা হচ্ছে। এতে তাঁরা দীর্ঘমেয়াদি কারাদণ্ডের মুখোমুখি হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন।

আয়োজকদের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চলতি সপ্তাহে মোট ৮টি শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এসব বিক্ষোভ থেকে বাংলাদেশের শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি এবং অধিকার সংরক্ষণের বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে।