একজন খুনির ফাঁসি এবং তারপর

সেলিনা হোসেনের ‘বিষণ্ন শহরের দহন’ বইটি এনেছে ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ
সেলিনা হোসেনের ‘বিষণ্ন শহরের দহন’ বইটি এনেছে ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ

এবারের বইমেলায় ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ ছেপেছে সেলিনা হোসেনের নতুন উপন্যাস বিষণ্ন শহরের দহন। উপন্যাসের কেন্দ্রে একজন খুনি। ডাকনাম সুজন। যে তার স্ত্রীকে খুন করেছে। খুনের মূলে আসমা নামের একজন বিবাহিতা মহিলার সঙ্গে তার অবৈধ সম্পর্ক। এ নিয়ে সুমনের সঙ্গে স্ত্রী মুনিরার বিরোধ, দ্বন্দ্ব-সংঘাত প্রাত্যহিক বিষয় হয়ে ওঠে। কিন্তু স্ত্রীর এই প্রতিবাদ কোনোমতেই মেনে নিতে পারে না সুমন। একদিন সে মুনিরাকে গাড়িতে চাপিয়ে নিয়ে যায় ঢাকা শহরের বাইরে। নির্জন ঝোপের আড়ালে নিয়ে গিয়ে ঠান্ডা মাথায় তাকে হত্যা করে।

স্ত্রীকে খুনের ব্যাপারে তার কোনো অনুশোচনা নেই। এতটুকু কষ্টও লাগেনি। বিচারে স্ত্রী হত্যার দায়ে সুজনের ফাঁসির আদেশ হয়। মুনিরা একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে।

এর শুরুটা বেশ আগ্রহসঞ্চারী। নির্জন কনডেম সেলে বসে মৃত্যুর প্রহর গুনছে সুজন। সেলিনা হোসেন এই উপন্যাসে শহরকে একটা চরিত্র হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন। বিবেকের মতো তাঁর সঙ্গে কথা বলে সেই শহর। কনডেম সেলে থাকা একজন ফাঁসির আসামির মনস্তত্ত্ব সম্পর্কে আমরা ধারণা করতে পারি, যখন চরিত্র হিসেবে শহর সুজনের সঙ্গে কথা বলে।

এভাবে দিন গড়াতে থাকে। তারপর আসে তার ফাঁসি কার্যকর করার প্রাক্‌–মুহূর্তটি। গোসল করানো হয়। মৌলভি সাহেব তাকে তওবা পড়ান। পরানো হয় যমটুপি। মিনিট-ঘণ্টা দেখে কার্যকর করা হয় সুজনের ফাঁসি।

যে জল্লাদ সুজনের ফাঁসি কার্যকর করে, সেই নুটু জল্লাদের প্রতিক্রিয়া এবং তার স্মৃতিচারণার ভেতর দিয়ে শুরু হয় সেলিনা হোসেনের এই উপন্যাসের অন্য আর সব পর্বের ঘটনা। সবই যেন এক সূত্রে গাঁথা। বিষণ্ন শহরের দহন সেলিনা হোসেনের এক ধ্রুপদিপ্রতিম সাহিত্যকর্ম। পাওয়া যাচ্ছে ‘ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশে’র প্যাভিলিয়নে।