স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক পরিচালককে ফের জিজ্ঞাসাবাদ

দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন পরিচালক আবদুর রশিদকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বুধবার সকাল ১০টা থেকে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুদকের উপপরিচালক সামছুল আলমের নেতৃত্বে একটি দল।

দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক এবং লাইন ডিরেক্টর (চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন) আবদুর রশিদকে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

গত ৩০ জানুয়ারি আবদুর রশিদকে ছয় ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দুদক সূত্র জানিয়েছে, ওই দিন তাঁর কাছে কিছু সুনির্দিষ্ট নথি চাওয়া হয়। নথি নিয়ে তাঁকে ১৩ ফেব্রুয়ারি দুদকে হাজির হতে বলা হয়। সে অনুসারে আজ তিনি হাজির হন। ওই দিন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভুয়া টেন্ডারের মাধ্যমে শত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগও রয়েছে।

এর আগে প্রতিষ্ঠানটির বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

অধিদপ্তরের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবজাল হোসেন ও তাঁর স্ত্রী রুবিনা খানমের সম্পদের তথ্য নিয়ে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। দুদক আবজালকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। রুবিনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হলেও তিনি সময়ের আবেদন করেছেন।

গত ২৩ জানুয়ারি অধিদপ্তরের অধীন বিভিন্ন কার্যালয়ের কিছু ‘দুর্নীতিবাজ, স্বেচ্ছাচারী ও ক্ষমতার অপব্যবহারকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীর’ বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে দুদক। চিঠিতে বলা হয়, ‘দুর্নীতির বলয়’ তৈরি করা এসব কর্মকর্তা-কর্মচারী ক্ষমতার অপব্যবহার করে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। দুদকে তাঁদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে অনেক অভিযোগ জমা হয়েছে, যা দুদকের গোয়েন্দা ইউনিটের অনুসন্ধান পর্যায়ে রয়েছে।

দুদকের ওই চিঠি পাওয়ার পর এসব কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে বদলি করা হয়। যে ২৩ কর্মকর্তা কর্মচারীকে বদলি করা হয়, তাঁদের মধ্যে আছেন ঢাকার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ের সহকারী প্রধান (পরিসংখ্যানবিদ) মীর রায়হান আলী, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ফারুক হাসান, প্রধান সহকারী আশরাফুল ইসলাম, প্রধান সহকারী সাজেদুল করিম এবং দুই উচ্চমান সহকারী তৈয়বুর রহমান ও সাইফুল ইসলাম।

চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী ফয়জুর রহমান, প্রধান সহকারী মাহফুজুল হক, কম্পিউটার অপারেটর আজমল খান, ময়মনসিংহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, প্রধান সহকারী-কাম হিসাবরক্ষক আব্দুল কুদ্দুস, সিলেটের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ের প্রধান সহকারী নুরুল হক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা গৌস আহমেদ, উচ্চমান সহকারী আমান আহমেদ ও অফিস সহকারী-কাম কম্পিউটার অপারেটর নেছার আহমেদ চৌধুরীকে দুদকের অনুরোধে বদলি করা হয়েছে।

এ ছাড়া খুলনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ের ব্যক্তিগত সহকারী ফরিদ হোসেন, অফিস সহকারী মো. মাসুম, প্রধান সহকারী আনোয়ার হোসেন, বরিশাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ের প্রধান সহকারী মো. রাহাত খান, উচ্চমান সহকারী মো. জুয়েল, রংপুর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী আজিজুর রহমান, স্টেনোগ্রাফার সাইফুল ইসলাম এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমকে বদলি করা হয়।