পাঠ্যবই বিক্রির সময় মাদ্রাসা সুপার আটক, অতঃপর...

৭০০ কেজি সরকারি পাঠ্যবই বিক্রি করার সময় ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চপই দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. হারুন অর রশিদকে আটক করেছেন স্থানীয় ক্ষুব্ধ লোকজন। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাঁকে আটক করা হয়। খবর পেয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রোকন উদ্দিন আহমেদ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তাঁকে মুক্ত করেন। স্থানীয় লোকজনের সামনে বইগুলো জব্দ করে মাদ্রাসার একটি কক্ষে জমা রাখেন তিনি।

মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রোকন উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিনা মূল্যে বিতরণের জন্য সরকারি বই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিক্রি করতে পারে না। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই বিতরণের পর যদি বই উদ্বৃত্ত থাকে, তাহলে সেগুলো শিক্ষা কার্যালয়ে ফেরত পাঠাতে হবে। উদ্বৃত্ত বই সরকারিভাবে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়ে থাকে।

চপই দাখিল মাদ্রাসা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১১টি বস্তায় ভরা বিক্রীত বইগুলোর মধ্যে চলতি (২০১৯ সাল) শিক্ষাবর্ষের কয়েকটি বই রয়েছে। বাকি বইগুলো ২০১৮ ও ২০১৭ শিক্ষাবর্ষের অব্যবহৃত। এসব বই কেজি দরে কিনেছেন উপজেলার মুশুলি ইউনিয়নের দাপনহাটি গ্রামের মো. লিটন মিয়া। মাদ্রাসার আঙিনায় দাঁড়িয়ে কথা হয় লিটন মিয়ার সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মাদ্রাসা সুপার মো. হারুন অর রশিদ ১১ টাকা কেজি দরে বই ও খাতা বিক্রি করেছেন। রোববার বইগুলো তিনি বুঝে নিচ্ছিলেন। লিটন মিয়া বলেন, তিনি একজন কাগজ ক্রেতা। গ্রামে ঘুরে তিনি কাগজপত্র কেনেন।

স্থানীয় লোকজন জানান, এই মাদ্রাসা থেকে বছরে একাধিকবার সরকারি বই ও শিক্ষার্থীদের উত্তরপত্র কেজি দরে বিক্রি করা হয়ে থাকে। এসবের পেছনে মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদের কয়েক জন সদস্য জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।

ঘটনাস্থলে গিয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদ্রাসা সুপার মো. হারুন অর রশিদ এই প্রতিবেদককে অফিস কক্ষের ভেতরে নিয়ে যেতে টানাটানি শুরু করেন। প্রশ্নের সরাসরি উত্তর জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বেচতে চাইছিলাম, অহন আর বেচতাম না।’ এ সময় এগিয়ে আসেন মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. চিনু মিয়া। এ বিষয়ে মন্তব্য করতে তিনি অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রোকন উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বই জব্দ করে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন আকারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোসাদ্দেক মেহ্দেী ইমাম স্যারকে অবহিত করা হবে। পরে তিনি যে ব্যবস্থা নিতে বলবেন, সেটাই করা হবে।’

ইউএনও মোসাদ্দেক মেহ্দেী ইমাম বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার প্রতিবেদন পেলেই তিনি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।