পিলখানা হত্যাকাণ্ডের 'পেছনের ব্যক্তিরা' চিহ্নিত হয়নি: ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

বিডিআর বিদ্রোহ ঘটনার সেনা তদন্ত প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশ না হওয়ায় হত্যাকাণ্ডের ‘পেছনের নেপথ্যেরা’ চিহ্নিত হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ সোমবার সকালে বনানীর কবরস্থানে পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে দলের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করা হয়। পরে বিএনপির মহাসচিব সাংবাদিকদের কাছে এই মন্তব্য করেন।

ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের যে তদন্তগুলো হয়েছিল, এর পূর্ণাঙ্গ কোনো তদন্ত এখনো জাতির সামনে প্রকাশ করা হয়নি। বিশেষ করে সেনাবাহিনী যে তদন্ত করেছিল, সেই তদন্ত এখনো পূর্ণাঙ্গ প্রকাশিত হয়নি। ফলে, স্বাভাবিকভাবে জাতির সামনে প্রশ্ন থেকেই গেছে—এই ভয়াবহ ঘটনার পেছনে মূল কারা ছিল, পরিকল্পনাকারী কারা ছিল, কারা লাভবান হয়েছে—এ বিষয়গুলো সেভাবে উদ্ঘাটিত হয়নি। আরও সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।’

২০০৯ সালের পিলখানা বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এই দিনটি আমাদের জন্য, জাতির জন্য কলঙ্কময় দিন। আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের ওপরে এই দিনে আঘাত করা হয়েছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের সেনাবাহিনী নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতীক। তাদের দুর্বল করে দেওয়া, তাদের মনোবলকে দুর্বল করে দেওয়াই ছিল সেদিনকার সেই বিদ্রোহ ও হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ। আমরা এই দিনটিকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে ঘোষণা করতে চাই এবং ঘোষণা করতে বলি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি এবং তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। তাঁদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি এবং এই দিনটিকে স্মরণ করে গোটা জাতিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করবার জন্য শপথ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

সকাল সাড়ে ১০টায় বনানী কবরস্থানে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভের বেদিতে বিএনপি মহাসচিবের নেতৃত্বে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। তাঁরা কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে সুরা পাঠ করেন এবং নিহত ব্যক্তিদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান। পরে নিহত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করেন নেতৃবৃন্দ।

প্রতিনিধিদলে ছিলেন হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, রুহুল আলম চৌধুরী, ফজলে এলাহী আকবর, কামরুজ্জামান, শাহজাহান মিয়া মিলন, সারোয়ার হোসেন, মিজানুর রহমান, মাহমুদুল হাসান, আমিনুল ইসলাম, শায়রুল কবির খান প্রমুখ।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) বিদ্রোহে বিডিআরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।