উচ্ছেদের আগেই পুড়ল জাহাঙ্গীরের বস্তি

মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে ভাঙার কথা ছিল ভাষানটেক এলাকার জাহাঙ্গীরের বস্তি। এর আগেই আগুনে পুড়ে গেল বিশাল বস্তিটি। গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে ভয়াবহ আগুনে পুড়ে যায় জাহাঙ্গীরের বস্তির প্রায় দেড় শ ঘর। আগুনে কোনো প্রাণহানি ঘটেনি বলে জানিয়েছেন বস্তিবাসী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

কামাল হোসেন নামের এক বস্তিবাসী জানান, রাত দেড়টার দিকে বস্তির পূর্ব প্রান্ত থেকে আগুন লাগে। এই আগুন পুলিশ লাইনের কাছাকাছি জায়গা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। বস্তির উল্টো দিকে রয়েছে ধামালকোট কাজলের টেক বস্তি। ১৯ ফেব্রুয়ারি সকালে এই বস্তি উচ্ছেদ করা হয়। এখানকার বাসিন্দাদের একটি অংশ আশ্রয় নেয় জাহাঙ্গীরের বস্তিতে।

মো. লিটন নামের এক বস্তিবাসী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগুন কেমনে লাগল বুঝি নাই। তবে কেউ বলে চুলা থেকে লাগছে। কেউ বলে বিদ্যুতে। আবার অনেকে বলে আগুন ধরানো হইসে।’

লিটন বলেন, ডোবার ওপর বস্তিটি গড়ে উঠেছে।

দুদিন ধরে বৃষ্টিতে আগুনে তুলনামূলক ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছে। তবে আগামী ৭ মার্চ জাহাঙ্গীরের বস্তি উচ্ছেদ হওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয় বলে জানান লিটন।

ফায়ার সার্ভিস বলছে, অপরিকল্পিতভাবে বস্তিটি করা হয়েছে। এখানে সব ধরনের বিশৃঙ্খলাই ছিল।

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন) মেজর শাকিল নেওয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, জলাশয়ের ওপরে বাঁশ-টিন দিয়ে টঙ ঘর করা হয়েছে। এখানে কয়েক শ টং ঘর রয়েছে। এই টং ঘরের মধ্যে এলোমেলোভাবে বিদ্যুতের তার টানা হয়েছে। তারগুলো পুরোনো। তা ছাড়া এখানে মশার কয়েল ছিল। এসব কারণে আগুন লেগে দ্রুত ছড়িয়ে যায়। তবে আগুনে এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো তথ্য নেই।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, আগুন লাগার ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটি সাত দিনের মধ্য প্রতিবেদন দেবে।

বস্তিটির পাশেই সিআরপি অবস্থিত। আগুন থেকে অল্পের জন্য সিআরপি রক্ষা পেয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য।

সিআরপির নির্বাহী পরিচালক মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, এখানে অনেক রোগী। আগুন যাতে এখানে পৌঁছাতে না পারে, সে জন্য তাঁরা সব চেষ্টা করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসও আসে। সবার চেষ্টায় কোনো সমস্যা হয়নি।