বিমানের অদক্ষতায় অনেক বিদেশি এয়ারলাইনস ঢাকা ছেড়েছে

বিমান বাংলাদেশ
বিমান বাংলাদেশ

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ে অদক্ষতার কারণে অনেক বিদেশি বিমান সংস্থা বাংলাদেশ ছেড়ে গেছে। প্রতিষ্ঠানটিতে বড় আকারের দুর্নীতির তথ্য পাওয়া গেছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

বিমান কেনা ও লিজ, রক্ষণাবেক্ষণ, টিকিট বিক্রি, কার্গো, আমদানি-রপ্তানি, ক্যাটারিং খাতসহ ৮টি দুর্নীতির উৎস তুলে ধরেছে দুদক। এসব দুর্নীতি প্রতিরোধে ৮টি সুনির্দিষ্ট সুপারিশও ওই প্রতিবেদনে রয়েছে।

বিমানের কার্যক্রম নিয়ে দুদকের প্রাতিষ্ঠানিক দলের প্রতিবেদনটি আজ রোববার সচিবালয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীর কাছে হস্তান্তর করেছেন দুদকের কমিশনার মোজাম্মেল হক খান।

উড়োজাহাজের বিভিন্ন ধরনের সহায়তা, যাত্রীর লাগেজ ও খাবারদাবার সরবরাহ, উড়োজাহাজ পুশব্যাক করাসহ বন্দর ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন ধরনের কাজই গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং।
এ সময় দুদক কমিশনার বলেন, ২৫টি প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান আইন, বিধি, পরিচালনাপদ্ধতি, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ-অপচয়ের দিক পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক দল গঠন করে। দলগুলোকে এসব প্রতিষ্ঠানের জনসেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে সফলতা ও সীমাবদ্ধতা, আইনি জটিলতা, সেবা গ্রহীতাদের হয়রানি ও দুর্নীতির কারণ চিহ্নিত করে তা বন্ধে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। কমিশনের নির্দেশনার আলোকে এসব দল প্রতিবেদন দাখিল করছে। ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে জানিয়ে দুদক কমিশনার বলেন, প্রতিটি ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বিষয়টিকে সাধুবাদ জানিয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

এ সময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী দুর্নীতি দমন কমিশনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, শুধু দুর্নীতি নয় যাঁরা কাজে অবহেলা করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যস্থা গ্রহণ করা হবে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। এই মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতিবাজদের স্থান নেই।

দুদক সূত্র জানায়, বিমান নিয়ে গঠিত প্রাতিষ্ঠানিক দলটি সংস্থাটির অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, বর্তমান কর্মকর্তা, বিভিন্ন বেসরকারি বিমান সংস্থায় কর্মরতদের সঙ্গে আলোচনা করে তথ্য সংগ্রহ করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ, গণমাধ্যমকর্মী, টিআইবিসহ বিভিন্ন গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠানে গিয়ে এ–সংক্রান্ত তাদের বক্তব্য এবং সংগৃহীত রেকর্ডপত্র ও তথ্য পর্যালোচনা করেছে। অনুসন্ধানকালে বিমানের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি সম্পর্কিত বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যসহ ভুক্তভোগীদের বক্তব্য গ্রহণ, প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক বিবৃতি, নিরীক্ষা ও অডিট প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে। সার্বিক পর্যালোচনা করে প্রাতিষ্ঠানিক দলটি তাদের প্রতিবেদন তৈরি করে।
দুদকের প্রতিষ্ঠানিক দলের প্রতিবেদনে বেবিচকের দুর্নীতির ৮টি উৎস চিহ্নিত করা হয়।

বিমান, বিমানের যন্ত্রাংশ, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং যন্ত্রাংশের বড় অঙ্কের কেনাকাটা এবং বিমান লিজের ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতি হয়ে থাকে বলে দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। কম্পিউটার-নেটসর্বস্ব কিছু মধ্যস্বত্বভোগী প্রতিষ্ঠান এসব কেনাকাটায় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এবং বিমানের সঙ্গে লিয়াজোঁ করার নামে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও পরিচালনা পর্ষদের কিছু সদস্যকে অনৈতিকভাবে যুক্ত করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। বড় অঙ্কের অর্থ লগ্নি করে এসব ফার্ম দরপত্রের স্পেসিফিকেশন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে এমনভাবে নির্ধারণ করে যাতে পছন্দসই কোম্পানি কাজ পায়। প্রাক্কলিত মূল্য প্রকৃত মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি দেখানোর ব্যবস্থা করে নেয়। ফলে নিম্নমানের যন্ত্রপাতি ২ থেকে ৩ গুণ বেশি দামে কিনতে হয়।

বিমান লিজের ক্ষেত্রে মধ্যস্বত্বভোগী ফার্ম দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এমন শর্তে লিজ নেওয়া হয়, যাতে বাংলাদেশ বিমানকে হাজার কোটি টাকা লোকসান গুনতে হয়। ইঞ্জিনের মেজর চেক-সাইকেল, মেয়াদপূর্তি ইত্যাদি হিসেবে না নিয়ে বিমান লিজ নেওয়ার কারণে এর আগে মেয়াদ শেষে হাজার কোটি টাকা দিয়ে নতুন ইঞ্জিন প্রতিস্থাপন করে বিমান ফেরত দিতে হয়েছিল। সুচতুরভাবে দরপত্র আহ্বান করা হয়, যখন ভালো কোম্পানির হাতে লিজ দেওয়ার মতো বিমান থাকে না। বাধ্য হয়ে বেশি দামে অসাধুদের পছন্দের কোম্পানি থেকে নিম্নমানের বিমান লিজ নিতে হয়। এসব বিষয়ে প্রতিবছর অভ্যন্তরীণ ও সরকারি নিরীক্ষা দল আপত্তি দিলেও শেষ পর্যন্ত তা অনিষ্পন্নই থেকে যায়।

দুদক বলছে, বিমান এবং গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং ইকুইপমেন্ট রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কেনাকাটায় শত শত কোটি টাকার দুর্নীতি হয়ে থাকে। বিমানের বোর্ড পরিচালক ও কর্মকর্তারা লাভবান হওয়ার জন্য তাদের পছন্দসই প্রতিষ্ঠানকে ঠিকাদার নিয়োগ করে কার্যাদেশ দেয়। নিম্নমানের যন্ত্রাংশ অতি উচ্চমূল্যে ক্রয় দেখিয়ে ঠিকাদার ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগসাজশে টাকা আত্মসাৎ করা হয় বলে দুদক জেনেছে। এ ছাড়া বিমান সি-চেকের জন্য তাদের পছন্দসই বিদেশি প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে অতি উচ্চমূল্যের বিল দেখিয়ে ভাগাভাগির মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করা হয় বলেও দুদক বলেছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের দুর্নীতির অন্যতম খাত হলো গ্রাউন্ড সার্ভিস। ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজশে উচ্চমূল্যে নিম্নমানের যন্ত্রপাতি কেনা হয়। অদক্ষতার কারণে অনেক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি না কিনে অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনা হয়। ওই সব যন্ত্রপাতির যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না। রক্ষণাবেক্ষণের মূল্যবান উপকরণাদিও বিক্রি করে আত্মসাৎ করা হয়। ফলে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে যন্ত্রপাতি নির্ধারিত সময়ে আগেই অকেজো হয়ে পড়ে। ফলে নতুন করে কেনাকাটা করতে গিয়ে দুর্নীতি করার নতুন সুযোগ তৈরি হয়।
অন্যদিকে, আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং কর্মী নিয়োগেও চলে ব্যাপক দুর্নীতি। এতে দিন দিন বাংলাদেশ বিমান অদক্ষ গ্রাউন্ড হ্যান্ডলারে পরিণত হয়েছে। গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং বিল বাবদ বিভিন্ন এয়ারলাইনস থেকে প্রতিদিন ফ্লাইট-টু-ফ্লাইট ভিত্তিতে লাখ লাখ টাকা বিল নেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, বিভিন্ন এয়ারলাইনস তাদের নিজস্ব উদ্যোগে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের অধিকাংশ কাজ করে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস চুক্তি অনুযায়ী এয়ারলাইনসগুলোকে ন্যূনতম সেবাও দিতে পারে না। এতে বহু বিদেশি এয়ারলাইনস বাংলাদেশে অপারেশন পরিচালনা করতে অনাগ্রহী হয়ে পড়ছে। অনেক এয়ারলাইনস ইতোমধ্যে ঢাকায় তাদের অপারেশন বন্ধ করে দিয়েছে।

দুদক বলছে, বিমানের আয়ের একটি বড় খাত কার্গো সার্ভিস। এই খাতে সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে কোটি কোটি টাকা এয়ারওয়ে বিল কম পাচ্ছে বিমান। অনেক সময় বিমানের কার্গো সার্ভিসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী আমদানি-রপ্তানিকারকদের যোগসাজশে ওজনে কম দেখিয়ে আবার কখনো একক পরিবর্তন করে (টনকে সিএফটি, সিএফটিকে টন) কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে আয় করছে। আমদানি ও রপ্তানিপণ্যের ওজন ও ভলিউম রেকর্ডভিত্তিক কম দেখিয়েও বেশি পরিমাণ মালামাল বিমানে ওঠানো হয়। এই অতিরিক্ত টাকা আমদানি-রপ্তানিকারকের সঙ্গে ভাগাভাগি করে আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে।

ট্রানজিট যাত্রীদের হিসাব এদিক-সেদিক করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়। প্রতিদিন ট্রানজিট যাত্রীর সংখ্যা যতজন হয়, তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি দেখিয়ে খাবারের বিল করে অতিরিক্ত টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি হয়। লে-ওভার যাত্রীদের জন্য নিয়ম অনুযায়ী হোটেলের প্রতি রুমে একজন রাখার কথা। কিন্তু বাস্তবে প্রতি রুমে ৪–৫ জন রাখা হয়। আর বিল তৈরি করা হয় জনপ্রতি। অনেক ক্ষেত্রে প্রাপ্যতা অনুযায়ী যাত্রীদের খাবার ও হোটেল দেওয়া হয় না। কিন্তু যথারীতি বিল করে অর্থ উত্তোলনপূর্বক আত্মসাৎ করা হয়।

দুদক বলছে, অতিরিক্ত ব্যাগেজের জন্য যাত্রীর কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে তা মূল হিসাবে না দেখিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়। যাত্রীদের বুকিং ট্যাগ এবং ফ্লাইট ডিটেইলে অতিরিক্ত ওজন দেখানো হয় না।
দুদকের পর্যবেক্ষণের তথ্যমতে, প্রায়ই বাংলাদেশ বিমানের টিকিট পাওয়া না গেলেও বাস্তবে বিমানের আসন খালি যায়। এ ক্ষেত্রে অন্যান্য এয়ারলাইনসের সঙ্গে যোগসাজশে অন্য এয়ারলাইনসকে টিকিট বিক্রির সুবিধা করে দেওয়া হয়। বিনিময়ে বিমানের কর্মকর্তারা কমিশন পান।
খাবারের ক্ষেত্রেও ব্যাপক দুর্নীতির কথা বলেছে দুদক। নিম্নমানের খাবার পরিবেশনের কারণে অনেক দেশি বিদেশি বিমান বিমানের ফ্লাইট ক্যাটারিং সেন্টার (বিএফসিসি) খাবার দেয় না। এই খাতে বিমান কোটি কোটি টাকা লোকসান দিচ্ছে। অন্যদিকে ঢাকার নামীদামি হোটেল থেকে বিএফসিসি থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার খাবার বিক্রি করে আত্মসাৎ করা হচ্ছে।

দুর্নীতি প্রতিরোধে দুদকর ৮ দফা সুপারিশ:

দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে ক্রয় কমিটি গঠন করে যেকোনো ব্যয়বহুল ক্রয়ের যথার্থতা, নমুনা, প্রাক্কলনসহ দরপত্র যাচাই-বাছাই করে সুপারিশ করেছে দুদক। নতুন কেনাকাটার ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ মতামতের ভিত্তিতে ক্রয় চুক্তিতে ব্যয়বহুল বিশেষ রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়গুলোর অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হয়ছে। এ ছাড়া নিয়মিত ক্রয়ের ক্ষেত্রে মানসম্মত একাধিক আন্তর্জাতিক কোম্পানির সঙ্গে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতির মাধ্যমে মেয়াদি সরবরাহ-চুক্তি করা যেতে পারে। এর ফলে মধ্যস্বত্বভোগীদের অনৈতিক প্রভাব এবং ঘুষ দেওয়া-নেওয়ার সুযোগ থাকবে না।

বিমান লিজের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ মতামতের ভিত্তিতে লিজ চুক্তির শর্ত নির্ধারণ করতে হবে এবং হজের ক্ষেত্রে হাতে সময় রেখে দরপত্র কার্যক্রম শুরু করতে হবে। এক হজ শেষেই পরবর্তী হজের জন্য বিমান লিজের কার্যক্রম শুরু করা সমীচীন। অতীত কেনাকাটার ক্ষেত্রে দৃশ্যমান বড় অসংগতিগুলোর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এ যাবৎকালের অডিট আপত্তিগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে একই ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিরুৎসাহিত হয়।

বিমানের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জাম ক্রয়ের তালিকা, কখন কেনা হয়েছে, কি দামে কেনা হয়েছে, কোন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কেনা হয়েছে, কত টাকা মূল্য পরিশোধ করা হয়েছে এসব রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে দুর্নীতির পরিমাণ নির্ধারণ করা প্রয়োজন। এ ছাড়া রক্ষণাবেক্ষণ ও ওভারহোলিং খাতে কেনাকাটার সময় আন্তর্জাতিক দরপত্রের নিয়ম সঠিকভাবে পালন হচ্ছে কি না, তা পর্যালোচনার জন্য বিষেশজ্ঞ টিম গঠন করা উচিত। টেন্ডার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনয়নের লক্ষ্যে ই-টেন্ডারিং বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন।

গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের সঙ্গে বাংলাদেশ বিমানের বড় ধরনের আয় এবং বিপুল রাষ্ট্রীয় কর্মসংস্থান সম্পৃক্ত। বাংলাদেশ বিমানকে দক্ষ গ্রাউন্ড হ্যান্ডলার হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আন্তর্জাতিক স্বনামধন্য গ্রাউন্ড হ্যান্ডলারের সঙ্গে ৩ থেকে ৫ বছর মেয়াদে চুক্তি করা যেতে পারে। ওই মেয়াদে চুক্তিবদ্ধ কোম্পানি গ্রাউন্ড হ্যান্ডালিং পরিচালনার পাশাপাশি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিমানকে দক্ষ করে গড়ে তুলবে।
বিমানের কার্গো ওজনের কাজটি নিয়মিত নজরদারি করা প্রয়োজন। এ ছাড়া ওজনপ্রক্রিয়া ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে এ দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব।

বিমানের ট্রানজিট যাত্রীদের তালিকা ফ্লাইটের সঙ্গে যুক্ত করে ডিজিটালাইজট করতে হবে। অতিরিক্ত ব্যাগেজের চার্জ আত্মসাৎ বন্ধে নজরদারি জোরদার করতে হবে। বিমানের ওয়েবসাইট অপডেটেড রাখতে হবে যাতে গ্রাহকেরা সেখান থেকে সর্বশেষ এবং পরিপূর্ণ তথ্য পেতে পারেন। বিমানকে সর্বোতভাবে ই-টিকিটিং, ই-রিজার্ভেশন এবং ই-প্রকিউরমেন্ট পদ্ধতিতে যাওয়া প্রয়োজন।