'ব্যবসা পরিচালনা করব স্বপ্নেও ছিল না'

নারীরা এমনিতেই অন্যদের তুলনায় পিছিয়ে। এর মধ্যেও সবচেয়ে সুবিধাবঞ্চিত প্রতিবন্ধী নারীরা। বেশির ভাগ প্রতিবন্ধী নারী দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করেন। পিছিয়ে পড়া এই প্রতিবন্ধী নারীদের উন্নয়নের মূলধারায় সংযুক্ত করতে মনিরুজ্জামান খানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ডিজঅ্যাবলড ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট (বিডিডিটি) নামের প্রতিষ্ঠানটি ২০০৭ সাল থেকে কাজ করছে।

বিডিডিটি অস্ট্রেলিয়া হাইকমিশনের ডাইরেক্ট এইড প্রোগ্রাম (ডিএপি) ২০১৫-১৬–এর অধীনে প্রতিবন্ধী মেয়েদের কর্মসংস্থান তৈরির জন্য ‘ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট অব ওমেন উইথ ডিজঅ্যাবিলিটিস থ্রু মার্কেটিং অব রেডিমেড গার্মেন্টস অ্যান্ড ট্রেনিং ফর এনহ্যান্সমেন্ট অব স্কিলস’ নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।

এই প্রকল্পের আওতায় ৪০ জন প্রতিবন্ধী নারী পোশাক তৈরি ও বাজারজাতকরণ বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। প্রশিক্ষণ শেষে প্রতিবন্ধী নারীরা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান পরিচালনার কথা ভাবেন। প্রতিবন্ধী নারীরা প্রশিক্ষিত ছিলেন। কিন্তু প্রধান সমস্যা ছিল পুঁজির। প্রশিক্ষিত প্রতিবন্ধী নারীরা বিডিডিটির সহায়তায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে দেখা করেন। প্রশিক্ষণ ও ভবিষ্যৎ ব্যবসার পরিকল্পনা গভর্নরের কাছে তুলে ধরেন। তিনিও সহযোগিতা করতে চান।

অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সভায় বিষয়টি তুলে ধরা হয়। এতে চারটি ব্যাংক শিথিল শর্তে ঋণ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করে। প্রতিবন্ধী নারীরা নিজ এলাকায় বসে পোশাক তৈরি ও বাজারজাত করেন।

প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত সফল ব্যবসায়ী প্রতিবন্ধী নারী মাকসুদা বলেন, ‘আমরা ব্যবসা পরিচালনা করব—এটি স্বপ্নেও ছিল না। প্রকল্প থেকেই আমরা ধারণা পেয়েছি। বর্তমানে আমরা উপার্জন করে সংসার পরিচালনা করছি। আমরা চাই, আমাদের এই বিষয়গুলো সবাই জানুক। অন্য প্রতিবন্ধী নারীরা উপকৃত হবে। আরও ব্যাংক ঋণ দিতে আগ্রহী হবে। ডোনাররা এ ধরনের প্রকল্পের প্রতি আগ্রহী হবে।’

এই অভিজ্ঞতা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে ঢাকার গুলশানে একটি হোটেলে নলেজ শেয়ারিং ওয়ার্কশপ অন এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ ডেভেলপমেন্ট অব মার্জিনালাইজেড ওমেন টুওয়ার্ডস মাইনস্ট্রামিং: রোল অব স্কিলস এনহ্যান্সমেন্ট অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনস’ শিরোনামে এক কর্মশালার আয়োজন করে বিডিডিটি। কর্মশালায় প্রতিবন্ধী নারীদের এই প্রকল্পের কথা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়।

লেখক: প্রথম আলোর দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সাংবাদিক