চুয়াডাঙ্গায় নৌকার প্রার্থীরা দলীয় চ্যালেঞ্জের মুখে

চুয়াডাঙ্গার চারটি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা দলীয় প্রার্থীদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন। চার উপজেলায় দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ১১ নেতা। এ ছাড়া বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি ও জাকের পার্টি মনোনীত ও নির্দলীয় পাঁচজন প্রার্থী রয়েছেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খুস্তার জামিল বলেন, দলীয় প্রার্থীর বাইরে কেউ ভোট করতে পারবে না, এমন কোনো নির্দেশনা এখনো আসেনি। বরং সার্বিক অবস্থাদৃষ্টে এবারের নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক, সুষ্ঠু ও শতভাগ নিরপেক্ষ হবে।

সদর উপজেলায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আসাদুল হক বিশ্বাস। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সাবেক পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার ও জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার। বিদ্রোহী এই দুই প্রার্থীই জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাংসদ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দারের পরিবারের সদস্য। রিয়াজুল সহোদর ভাই ও নঈম ভাতিজা। এ ছাড়া চেয়ারম্যান পদে জোটের শরিক দল বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মামুন অর রশিদ ও জেলা জাকের পার্টির যুগ্ম সম্পাদক মো. শফিউদ্দিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

সদরে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আসাদুল হক বিশ্বাস বলেন, ‘নেত্রী আমাকে কেন্দ্র থেকে নৌকার মনোনয়ন দিয়েছেন। যাঁরা আওয়ামী লীগের, তাঁরা নৌকার বাইরে যাবেন না। তা ছাড়া, সাধারণ মানুষের সঙ্গে আমার যথেষ্ট ভালো সম্পর্ক আছে।’

আলমডাঙ্গায় আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হলেন জেলা যুবলীগের ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক চিৎলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান। এখানে স্বতন্ত্র হিসেবে মাঠে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আইয়ুব হোসেন, জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান কবীর ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আনিসুজ্জামান মল্লিক। এ ছাড়া নির্দলীয় প্রার্থী সানোয়ার হোসেন ভোটযুদ্ধে রয়েছেন। সানোয়ার একসময়ে বিএনপির রাজনীতি করলেও ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় দল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেন।

নৌকার প্রার্থী জিল্লুর রহমানের আশা, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিনে ইতিবাচক কিছু ঘটবে।

দামুড়হুদায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল আলম। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সাংসদ আলী আজগারের সহোদর দর্শনা পৌর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আলী মনসুর, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবদুল কুদ্দুস ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক আবু তালেব। এ ছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা জাতীয় পার্টির শ্রমবিষয়ক সম্পাদক এহসানুল হক।

একাধিক দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থীর বিষয়ে দামুড়হুদার সিরাজুল আলম বলেন, ‘মাঠের লোকজন সব আমারই আছে। কেন্দ্রীয় বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, নৌকার বাইরে দলীয় লোকের ভোট করার সুযোগ নেই।’

জীবননগরে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু মো. আবদুল লতিফ। এখানে স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নজরুল মল্লিক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তুজা ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান। এর বাইরে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নৌকার প্রার্থী আবু মো. আবদুল লতিফের দাবি, ‘দলীয় লোকজন আমার ও নৌকা প্রতীকের পক্ষেই আছেন।’