টিআইবি একচোখা নয়, দুদক চেয়ারম্যানের বক্তব্য বিভ্রান্তিকর

দুর্নীতিবিরোধী সংগঠন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছে, সংগঠনটি সম্পর্কে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানের বক্তব্য ‘অমূলক’ ও ‘হতাশাব্যঞ্জক’। আজ বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলে টিআইবি।

গতকাল মঙ্গলবার দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, জনগণের মধ্যে টিআইবি নিয়ে ইতিবাচক ভাবমূর্তি থাকলেও এর কিছু সমালোচনাও শোনা যায়।
দুদকের প্রধান কার্যালয়ে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ডিএফআইডি, সুইডেন ও ডেনমার্কের দূতাবাসের সহায়তায় জেনেভা-ভিত্তিক নীতি ও কৌশল বিশেষজ্ঞ ম্যাথিয়াস বসের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল দুদক চেয়ারম্যানের সঙ্গে মতবিনিময় করে। সেই সময় এ মন্তব্য করেন দুদক চেয়ারম্যান। তিনি টিআইবি সম্পর্কে বলেন, ‘তাদের একচোখা হলে চলবে না, দুচোখা হতে হবে।’

আজ টিআইবির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দুদক কর্তৃপক্ষ টিআইবির কর্মপরিধি ও কার্যক্রম সম্পর্কে ওয়াকিবহাল বলেই ধারণা করত টিআইবি। দুঃখজনকভাবে দুদক চেয়ারম্যানের বক্তব্যে তা ভুল প্রতীয়মান হয়েছে। টিআইবি কোনোভাবেই ‘একচোখা’ নয়; টিআইবির সব অবস্থান, প্রতিবেদন ও বক্তব্য সম্পূর্ণ বস্তুনিষ্ঠ ও বৈজ্ঞানিক পন্থায় প্রণীত গবেষণাপ্রসূত ও নিরপেক্ষ।’

বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘টিআইবি শুধু বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও খাতের সুশাসনের ঘাটতি ও দুর্নীতিসংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের ওপর নির্ভর করে ঘাটতি চিহ্নিত করে না, বরং প্রতিটি ক্ষেত্রেই সমস্যা উত্তরণে সুনির্দিষ্ট সুপারিশমালা প্রদান করে থাকে। তা ছাড়া, টিআইবি প্রণীত প্রতিটি গবেষণা প্রতিবেদনেই সংশ্লিষ্ট খাতের বা প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি ইতিবাচক অর্জনসমূহ অত্যন্ত বস্তুনিষ্ঠভাবে উপস্থাপন করা হয়।’

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আগ্রহী যে কারও জন্য টিআইবির আয়-ব্যয়ের হিসাবসংক্রান্ত নথিপত্র সর্বদা উন্মুক্ত। দুদক যদি টিআইবির আর্থিক প্রতিবেদনসহ সার্বিক কার্যক্রমের ব্যাপারে কোনোরূপ সন্দেহ প্রকাশ করে, তাহলে দুদক সহজেই টিআইবি সম্পর্কে তদন্ত করে দেখতে পারে। আমরা দুদককে এ ব্যাপারে পূর্ণ সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত।’

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘টিআইবির গবেষণা কার্যক্রম নিয়ে সমালোচনা নতুন কিছু নয়, এটা এখন আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশে পরিণত হয়েছে। তবে, দুদকের মতো একটি সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান, যার আইনগতভাবে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ থাকার কথা, যখন একই সংস্কৃতির প্রভাবে প্রভাবিত হয়, তখন তা সত্যিই দুঃখজনক।’

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সমালোচনা সহ্য করার মতো সৎসাহস দুদক অর্জন করবে। আর যা-ই হোক, দুদক কোনো রাজনৈতিক বা সরকারি প্রতিষ্ঠান নয়।