রাত-বিরাতে 'বোমা' নিয়ে তুলকালাম, তারপর...

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট আবাসিক এলাকায় পাওয়া গেছে বোমাসদৃশ এই বস্তুটি। পুলিশ বলছে, এটি বিস্ফোরক নয়। ছবি: প্রথম আলো
মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট আবাসিক এলাকায় পাওয়া গেছে বোমাসদৃশ এই বস্তুটি। পুলিশ বলছে, এটি বিস্ফোরক নয়। ছবি: প্রথম আলো

বুধবার রাত ১১টা। পাঁচতলা একটি বাড়ির নিচতলায় বৈদ্যুতিক মিটার বাক্সের ওপর বোমাসদৃশ একটি বস্তু দেখতে পান বাড়ির মালিক। সঙ্গে সঙ্গে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে, বাড়িতে বোমা রাখা হয়েছে। এতে চারপাশে হইচই শুরু হয়ে যায়। বাড়ি থেকে নেমে সবাই চলে আসেন খোলা জায়গায়। ঘটনাস্থলে চলে আসে পুলিশও। পুলিশি পাহারায় বোমাটি ঘিরে রাতভর চলে নানা নাটকীয়তা।

এই ঘটনা ঘটেছে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট আবাসিক এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা কাঞ্চন সাহার বাড়িতে। ঘটনার পর থেকেই বাড়িতে থাকা বাসিন্দা ও স্থানীয় লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করার দাবিও তুলেছেন স্থানীয় লোকজন। অবশ্য পুলিশ জানিয়েছে, বোমাসদৃশ বস্তুটি আদতে কোনো বিস্ফোরক নয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্বৃত্তরা স্থানীয় লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াতে বাড়ির নিচতলায় মিটার বাক্সের ওপর রেখে যায় বোমাসদৃশ বস্তু। গতকাল বুধবার রাতে মালিক কাঞ্চন সাহা বাড়িতে ঢোকার সময় এটি দেখতে পান। মিটার বাক্সের ওপর ব্যাটারির সঙ্গে সার্কিট ঘড়ি, তার ও স্কচটেপে জড়ানো ছিল বস্তুটি। এ সময় তাঁর চিৎকারে স্থানীয় লোকজন চলে আসেন। পরে বাড়িতে থাকা সবাই বাড়ি ছেড়ে খোলা জায়গায় চলে আসেন। খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বোমাসদৃশ বস্তুটি উদ্ধার করে। বৃহস্পতিবার সকালে তা পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট আবাসিক এলাকার একটি বাড়িতে এভাবেই রাখা ছিল বোমাসদৃশ বস্তুটি। ছবি: প্রথম আলো
মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট আবাসিক এলাকার একটি বাড়িতে এভাবেই রাখা ছিল বোমাসদৃশ বস্তুটি। ছবি: প্রথম আলো

বাড়ির মালিক কাঞ্চন সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বাড়ির ভেতরে কেউ বোমা রাখতে পারে, তা আমি কল্পনাও করতে পারছি না। আমার সঙ্গে কারও কোনো বিরোধ নেই, কোনো শত্রুতা নেই। কারা এমন কাজ করল, তাই বুঝতে পারছি না। ঘটনার পর থেকে আমরা সবাই ভয়ের মধ্যে আছি।’

টেকেরহাট আবাসিক এলাকার বাসিন্দা খন্দকার মুকুল বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বাড়ির সবাইকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়। বোমাসদৃশ বস্তুটি উদ্ধারের পর তা একটি পানিভর্তি পাত্রে রেখে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ পুরো বাড়িতে তল্লাশি চালায়।

রাজৈর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইমতিয়াজ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বোমাসদৃশ বস্তুটির বিষয়ে এখনো স্পষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে এটি বিস্ফোরক নয়। কে বা কারা এমন কাজ করেছে, সে বিষয়ে এখনো কিছু বলা যাচ্ছে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

রাজৈর থানার কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল মোর্শেদ বলেন, ‘এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়াতে দুর্বৃত্তরা এমন কাজ করে থাকতে পারে। আমরা ওই এলাকাসহ আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছি।’