'মর্যাদাহানির দুঃখে' প্রাধ্যক্ষের পদ থেকে পদত্যাগ!

অধ্যাপক মিজানুর রহমান
অধ্যাপক মিজানুর রহমান

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষের পদ থেকে ‘মর্যাদাহানির দুঃখে’ পদত্যাগ করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান। শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ও হল সংসদে দেওয়া ছাত্রলীগ প্যানেলের প্রার্থীদের দ্বারা তাঁর মর্যাদাহানি হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

আজ শুক্রবার বিকেলে মিজানুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান বরাবর ওই পদত্যাগপত্র জমা দেন। এর আগে দুপুরে হলের মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করতে গিয়ে এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে মিজানুর রহমানের ছেলে ‘বেয়াদবি’ করছেন বলে অভিযোগ ওঠে, যা নিয়ে একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মিজানুর রহমানের পদত্যাগের দাবি তোলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, অধ্যাপক মিজানুর রহমানের ছেলে আজ দুপুরে ফজলুল হক মুসলিম হলের মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করতে যান। জায়নামাজ বিছাতে গিয়ে হলের এক জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থীর গায়ে তার পা লাগে। এতে ক্ষুব্ধ হন ওই শিক্ষার্থী। নামাজ শেষে ওই শিক্ষার্থী মিজানুর রহমানের ছেলেকে জেরা করেন এবং ক্ষমা চাইতে বললে মিজানুর রহমানের ছেলে ওই শিক্ষার্থীকে অপমানজনক কথা-বার্তা বলেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই শিক্ষার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়ে হল সংসদে ছাত্রলীগ প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী শাহরিয়ার সিদ্দিক, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী মাহফুজুর রহমানসহ হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অধ্যাপক মিজানুর রহমান ও তাঁর ছেলেকে হলের শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষোভটি একপর্যায়ে অধ্যাপক মিজানুর রহমানের পদত্যাগের দাবিতে রূপ নেয়।

জানা গেছে, হল শাখা ছাত্রলীগের বিক্ষোভের মধ্যে হলে যান ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের শান্ত করেন তাঁরা। তবে ঘটনার বিষয়ে জানতে সনজিত ও সাদ্দামকে ফোন করা হলেও তাঁরা ফোন ধরেননি।

জানতে চাইলে অধ্যাপক মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনা শুনে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি, কে বা কারা আমার ছেলেকে মেরে ওর চশমা ভেঙে ফেলেছে। আমার ছেলে বলেছে যে ও ইচ্ছা করে কারও গায়ে পা দেয়নি, ভুলক্রমে হয়ে গেছে। কে এই কাজটি করল, জানতে গেলে তাঁরা আমারও মর্যাদাহানি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজেদের নীতিজ্ঞান হারিয়ে এমন আচরণ করেছে, যা আমাকে দুঃখ দিয়েছে। আশা করছি, ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে এমন নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবে, যাঁরা হবেন নীতিজ্ঞানসম্পন্ন৷’ এই ঘটনায় দুঃখ পেয়ে আজ বিকেলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে গিয়ে প্রাধ্যক্ষের পদ থেকে পদত্যাগের চিঠি দিয়ে এসেছেন বলে জানান।

এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি ৷