শিক্ষা কর্মকর্তার সই জাল করতেন তিনি!

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সই জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া নিয়োগ, বিদ্যালয়ের অর্থ ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার এবং ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগে মাগুরার মহম্মদপুর মডেল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলার আসামি প্রধান শিক্ষক এ কে এম নাসিরুল ইসলাম।

আজ বুধবার মহম্মদপুর থানায় মামলাটি করেন মহম্মদপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলাটির তদন্ত এবং পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনা করবেন বলে জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম।

আরএসকেএইচ ইনস্টিটিউট নামে পরিচিত মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার মডেল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এ কে এম নাসিরুল ইসলাম ২০১০ সালের ১ জুলাই থেকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। মামলায় বাদী আনোয়ার হোসেনের অভিযোগ, এই সময়ে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির সম্পদ ও সুনামের ব্যাপক ক্ষতি করেছেন। ২০১৫ সালে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সই জাল করে ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারির মাধ্যমে চারজন কর্মচারী নিয়োগ করে তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন বাদী। নিয়োগপ্রাপ্তরা বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকলেও গত ৪ বছর ধরে বেতন নিচ্ছেন।

এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনা অন্যান্য অভিযোগগুলো হলো-বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে জাতীয়করণের নাম করে অন্তত ২৫ লাখ টাকা আদায়, বিদ্যালয়ের ৬২টি দোকান বিধি বহির্ভূতভাবে বরাদ্দের মাধ্যমে অর্থ গ্রহণ করেও বিদ্যালয়ের হিসাবে জমা না দেওয়া, চলতি শিক্ষা বছরে বিদ্যালয়টির ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ১৬০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির কথা থাকলেও প্রধান শিক্ষক নাসিরুল ইসলাম একক সিদ্ধান্তে অবৈধ সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে অতিরিক্ত ৪৩ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করেন এবং বিদ্যালয় ফান্ড থেকে গত এক বছরে নিজের ধূমপানের পেছনে ব্যয় করেছেন লক্ষাধিক টাকা। এ ছাড়াও বিদ্যালয়টির দুটি হিসাব যৌথ সইয়ে পরিচালিত হওয়ার কথা থাকলেও তিনি জালিয়াতির মাধ্যমে একক সইয়ে সেখান থেকে অর্থ উত্তোলন করেছেন। এমন সব আর্থিক দুর্নীতির বিষয় উল্লেখ করে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন থানায় মামলাটি করেন। সম্প্রতি মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসিফুর রহমানের নেতৃত্বে করা তদন্তে এসব তথ্যের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন বাদী।

এ বিষয়ে এ কে এম নাসিরুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, মামলাটি থানায় রেকর্ডের পর যাবতীয় কাগজপত্র দুদকের যশোর অঞ্চলের উপপরিচালক বরাবর পাঠানো হয়েছে। তাঁরা মামলাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।