শৌচাগারের রাজনৈতিক উদ্বোধন
গণশৌচাগার উদ্বোধন হয়েছে দুই মাস আগে। কিন্তু এখনো গেটে ঝুলছে তালা। ফলে এ এলাকার পথচারী আর দোকানিদের শৌচকর্ম নিয়ে ভোগান্তি রয়েই গেছে। তবে ডিএসসিসির কর্মকর্তা বলেছেন, এটি আসলে রাজনৈতিক উদ্বোধন। পানি ও বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়াই হয়নি।
দোলাইরপাড় নতুন রাস্তায় এই গণশৌচাগারের অবস্থান। গত ২৬ জানুয়ারি গণশৌচাগারটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। এর পাশেই সিএনজির যন্ত্রাংশের দোকান মো. আলীর। তিনি বলেন, ‘উদ্বোধনের পরপরই টয়লেটে তালা লাগানো হইছে। খুললে আমাগো লাইগাও ভালো হইত। কারণ, এহন প্রাকৃতিক কাজ সারনের লাইগা হয় মসজিদে, না হয় বাসায় যাওন লাগে। এইডা খুললে আর এ ভোগান্তি পোহান লাগত না।’
নতুন রাস্তায় গতকাল গিয়ে দেখা গেছে, শৌচাগারের চারপাশে ঘিরে বিভিন্ন পাতাবাহার ও ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে। তবে সামনের অংশের গাছ ভালো থাকলেও পেছনের অংশের গাছগুলো অবহেলা আর অযত্নে রোদে পুড়ে মারা গেছে। গণশৌচাগারে প্রবেশের জন্য দুই পাশে দুটি প্রবেশপথ আছে। দুটিতেই তালা দেওয়া। গণশৌচাগারের ঠিক বিপরীত দিকের দেয়ালে বেশ কয়েকজনকে মূত্র ত্যাগ করতে দেখা যায়।
পাশেই একটি গ্যারেজে সিএনজি রাখেন জামাল মাতবর। তিনি বলেন, ‘আশপাশের যে গাছগুলা দেখতেছেন, তা পানির অভাবেই মারা গেছে। যত্ন না নিলে যা হয় আর কি। এমনে চললে সামনের গাছগুলাও বাঁচব না। আর মানুষ টয়লেট পায় না দেইখাই তো এই দেয়ালে প্রস্রাব করে।’
জানা যায়, পুরুষ ও নারীদের জন্য দুটি করে চারটি পৃথক কক্ষ রয়েছে গণশৌচাগারটিতে। এ ছাড়া প্রতিবন্ধীদের জন্য আছে বিশেষ ব্যবস্থা। গণশৌচাগারটির পাশেই দোলাইরপার উচ্চবিদ্যালয়। স্কুলটির দ্বিতীয় শ্রেণিতে পরে সিনথিয়া রহমান। তার মা মহুয়া আক্তার বলেন, মেয়েকে প্রতিদিন সকালে স্কুলে নিয়ে আসি। ওর স্কুল শেষ হওয়া পর্যন্ত বাইরেই বসে থাকতে হয়। প্রাকৃতিক কাজ সারার জন্য মাঝেমধ্যেই ঝামেলা পোহাতে হয়। গণশৌচাগারটি খুললে আমিসহ বাকি অভিভাবকেরা স্বস্তি পেত।
এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) অঞ্চল-৫–এর নির্বাহী কর্মকর্তা সামসুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘গণশৌচাগারটি উদ্বোধন হয়েছে ঠিকই, তবে তা রাজনৈতিক উদ্বোধন বলা যায়। কারণ গণশৌচাগারটির পানি ও বিদ্যুতের লাইন এখনো দেওয়া হয়নি। তা ছাড়া দরপত্র আহ্বান করে গণশৌচাগারটি চালানোর জন্য সিটি করপোরেশন থেকে কাউকে ইজারা দেওয়া হবে। সব ঠিক হওয়ার আগেই স্থানীয় কাউন্সিলর রাজনৈতিকভাবে উদ্বোধন করে দিয়েছেন; যা একেবারেই অনুচিত হয়েছে। তবে গণশৌচাগারটি আগামী এপ্রিলের শুরুর দিকে থেকে চালু করা যাবে বলে আমি আশাবাদী।’
গণশৌচাগারটি ডিএসসিসির ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের আওতাধীন। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য স্থানীয় কাউন্সিলর কাজী হাবিবুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।