ভোট ডাকাতির অভিযোগ এনে পুনর্নির্বাচন দাবি

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তুয়ারডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালট নিয়ে নিজেদের মতো করে নৌকা প্রতীকে সিল মারা হয়েছে। অন্যান্য কেন্দ্রেও জোর করে ঢুকে একইভাবে ভোট ডাকাতি করা হয়েছে।
২৪ মার্চ অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে এমন অভিযোগ তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ চেয়ারম্যান প্রার্থী শহীদুল ইসলাম পিন্টু। নির্বাচনে পরাজিত এই প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এ ব্যাপারে তিনি জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তাকেও লিখিতভাবে জানিয়েছেন।
নির্বাচনের বেসরকারি ফল অনুযায়ী, নৌকার প্রার্থী এ বি এম মোস্তাকিম ৭৫ হাজার ৩৪১ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আনারস প্রতীকের শহীদুল ইসলাম পেয়েছেন ৪০ হাজার ৭০৩ ভোট।
গতকাল বুধবার দুপুর ১২টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শহীদুল ইসলাম বলেন, তাঁর এজেন্টদের বের করে দিয়ে টেবিলে ব্যালট রেখে নৌকা প্রতীকে সিল মারার দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী রয়েছে। মুড়ি বইতে নৌকায় সিল মারা অবস্থায় বহু সংখ্যক ব্যালট রেখে দিতে দেখা গেছে। পরে সেসব ভোট বাক্সে ঢোকানো হয়েছে। এমনকি তুয়ারডাঙ্গা কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সুকুমার মণ্ডল প্রার্থী শহীদুল ইসলামকে বলেছেন ‘নৌকার প্রার্থী মোস্তাকিমের সন্ত্রাসী বাহিনীর চাপের মুখে ইউএনও ও ওসির সাহায্য চাইলেও তাঁরা কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় সন্ত্রাসীদের হাতে ব্যালট তুলে দিতে বাধ্য হই।’
শহীদুল ইসলাম বলেন, যেসব কেন্দ্রে ভোট ডাকাতি হয়নি, সেখানে ২৫-৩০ শতাংশ ভোট পড়েছে। আর ভোট ডাকাতির কেন্দ্রগুলোতে ৫৫-৯৫ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে দেখানো হয়েছে। উপজেলার ৭৮টির মধ্যে ৪৯টি কেন্দ্রে এ ধরনের ডাকাতি ও অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। প্রশ্নবিদ্ধ এই ভোট বাতিল করে পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবি জানান শহিদুল।
অভিযোগ সম্পর্কে তুয়ারডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সুকুমার মণ্ডল বলেন, ‘আমি ২৭টি ভোট পড়ার পর সব ব্যালট ভোট ডাকাতদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা বলিনি। তবে ৫-৬ জন এসে কিছু ঝামেলা করার চেষ্টা করলে ইউএনওকে জানানোর পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়।’
চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী প্রার্থী এ বি এম মোস্তাকিম বলেন, মানুষ নৌকা প্রতীকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়ে তাঁকে জয়ী করেছেন। তাঁর কর্মী ও সমর্থকেরা কোথাও ভোটে বাধা কিংবা ভোট কেটে নেয়নি, বরং পরাজিত প্রার্থীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আশাশুনিতে বিশেষ ব্যবস্থায় ভোট গ্রহণ করা হয়েছে।

ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর একই অভিযোগ
একই দাবি নিয়ে গতকাল সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে আরও একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভাইস চেয়ারম্যান পদে পরাজিত প্রার্থী উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি স ম সেলিম রেজা। তিনি বলেন, ৪৮টি কেন্দ্রে নৌকার প্রার্থী এ বি এম মোস্তাকিম একজন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর সঙ্গে প্যানেল করে ভোট ডাকাতি করিয়েছেন। তিনি আশাশুনিতে পুনরায় ভোট দাবি করেন।
নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে অসীম বরণ চক্রবর্তী ৪৪ হাজার ৭৫৪ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছেন। স ম সেলিম রেজা পেয়েছেন ৭ হাজার ২৯০ ভোট।