ইব্রাহিমপুরে ছয় দিন পর এল পানি, জনমনে স্বস্তি

ছয় দিন পর গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পানি এসেছে কাফরুল থানার ইব্রাহিমপুরের একুশে সরণিতে। এতে সড়কের হাজারো বাসিন্দার মধ্যে স্বস্তি এসেছে। তাঁরা বলছেন, পানির অভাবে স্বাভাবিক জীবনযাপনে ছন্দপতন ঘটেছিল। পানি আসায় দৈনন্দিন জীবনে সেই ছন্দ ফিরেছে। এখন পানিসংকটের স্থায়ী সমাধান চেয়েছেন তাঁরা।

সরণির বাসিন্দা ও শহীদ বীর উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজের শিক্ষক সালমা আরজু পানির অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। কলেজে ক্লাস নিতেও যেতে পারেননি। পানির আসার খবর দিতে গিয়ে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘পানি না থাকায় ব্যক্তিগত জীবন, কর্মজীবন—দুই-ই থমকে গিয়েছিল। পানি আসায় খাওয়া, গোসল, রান্নাবাড়ার কাজে স্বস্তি ফিরে এসেছে। মনে হচ্ছে, জীবনে নতুন করে শান্তি ফিরে এল।’

গত বৃহস্পতিবার প্রথম আলোয় ‘ইব্রাহিমপুরে পানি নেই, জবাবও নেই’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তাতে এই এলাকায় টানা পাঁচ দিন ধরে পানি না থাকায় বাসিন্দাদের দুর্ভোগ তুলে ধরা হয়ছিল। পানি না থাকার কারণ জানতে ঢাকা ওয়াসার সঙ্গে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলেও কোনো উত্তর মেলেনি। তবে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার দিন সন্ধ্যা থেকেই পানি আসতে শুরু করেছে বলে জানান বাসিন্দারা।

বাসিন্দারা জানান, ছয় দিন পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে লাইনে পানি আসতে শুরু করে। এ সময় যদিও লাইনে পানির চাপ কম ছিল। তবে গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে পানি স্বাভাবিকভাবে আসছে।
সড়কের ৯১০ নম্বর ভবনের ১২টি ফ্ল্যাটে কমপক্ষে ৫০ জন মানুষের বসবাস করেন। তাঁদের জরুরি কাজগুলো সারতে প্রতিদিন ১ হাজার ২০০ টাকার পানি কিনতেন বাড়ির মালিক। এর পাশাপাশি ভাড়াটেরাও পানির জার কিনে ব্যবহার করতেন। কেউ কেউ অন্য এলাকায় স্বজনের বাড়ি গিয়ে গোসল করে বা কাপড় ধুয়ে নিয়ে আসতেন।

এই বাড়ির মালিক আতিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, পানি সরবরাহ করতে না পারায় ভাড়াটেদের কাছে অনেক জবাবদিহি করতে হয়েছে। পানি আসায় এখন স্বস্তি ফিরে এসেছে। পানির জন্য বাড়তি খরচও লাগছে না। আবার পানি আসার অপেক্ষায় নির্ঘুম রাতও কাটাতে হচ্ছে না বলে জানান তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার প্রতিটি বাসাতেই জমে থাকা কাপড়চোপড়, এঁটো বাসন, ধোয়া-মোছায় ব্যস্ত ছিলেন অনেকেই। শিক্ষার্থী মাহিনূর আক্তার বলেন, এই গরমে গোসল না করে থাকা বা মাপা পানি দিয়ে গোসল করা কষ্টকর। পানি আসায় সে কষ্ট দূর হয়েছে।

পানি বন্ধ থাকার কারণ জানেন না এলাকাবাসী। পানি আসায় স্বস্তি ফিরলেও মন থেকে আশঙ্কা কাটেনি। আবার কখন পানি বন্ধ হয়, এই নিয়ে তাঁদের উদ্বেগ। এলাকাবাসী পানিসংকটের স্থায়ী সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।