সামাজিক অনুষ্ঠানের সুযোগ নিয়ে সাজবে পার্ক

থ্রিডি নকশায় ধলপুরে ১০ নম্বর আউটফল স্টাফ কোয়ার্টার পার্ক।
থ্রিডি নকশায় ধলপুরে ১০ নম্বর আউটফল স্টাফ কোয়ার্টার পার্ক।

একদিকে থাকবে সমৃদ্ধ পাঠাগার, অন্যদিকে প্রজাপতির আদলে বাগান। নিচতলায় মিলনায়তন, আর এর সামনের মাঠে শিশুদের বিনোদনের ব্যবস্থা। এমন নকশায় ধলপুরে একটি পার্কের নির্মাণকাজ হচ্ছে। আগামী জুন মাসেই পার্কটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

ধলপুরে সিটি করপোরেশন স্টাফ কোয়ার্টার ১০ নম্বর আউটফল এলাকায় পার্কটি তৈরি করা হচ্ছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অঞ্চল-৫ (সায়েদাবাদ) এর সংস্কারকাজ তদারকি করছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ১৮ কাঠা জমির ওপর এই পার্কটিতে বেশ বৈচিত্র্য রাখা হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দৃষ্টিনন্দন হবে প্রজাপতির আকারের বাগান। পার্কের ভেতরে থাকা একতলা ভবনের ছাদের মধ্যে প্রজাপতির আদলে পাঁচটি কাঠামো তৈরি করা হয়েছে। পার্কে সময় কাটানো কেউ সেখানে গেলেই মনে হতে পারে পাঁচটি সবুজ প্রজাপতি সেখানে বসে আছে। এর পাশেই একটি পাঠাগার তৈরি হবে। এটির স্থাপনাও হবে দৃষ্টিনন্দন। এ ছাড়া নিচতলায় নির্মিত মিলনায়তনে বিয়ে, গায়েহলুদসহ সামাজিক অনুষ্ঠান করার সুযোগ থাকবে।

ডিএসসিসি সূত্রে জানা গেছে, পার্কটির সংস্কার করতে ২ কোটি ২৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কাজ শুরু হয়েছে ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে। ওই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই এর কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে নকশা চূড়ান্ত করতে জটিলতার সৃষ্টি হওয়ায় কাজ শুরু হয়েছে মাস চারেক পর। তাই যথাসময়ে কাজ শেষ হয়নি। তবে নতুন করে এই কাজের সময় বাড়ানো হয়েছে। আগামী জুন মাসের মধ্যেই পার্কটির পুরো কাজ শেষ হবে এবং তা উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

জানতে চাইলে অঞ্চল-৫–এর নির্বাহী প্রকৌশলী মিথুন চন্দ্র শীল প্রথম আলোকে বলেন, পার্কটির সংস্কারের মূল কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। এখন শেষ মুহূর্তের কাজ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আয়তনে ছোট হলেও পার্কটির নকশায় হরেক রকম বৈচিত্র্য রাখা হয়েছে, যা শিগগিরই দৃশ্যমান হবে।

গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, ইতিমধ্যে পার্কটির পশ্চিম পাশের ভবন নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। একতলা ভবনের ছাদে পাঁচটি প্রজাপতির আদলে নকশা তৈরির কাজও শেষ পর্যায়ে। এখন সামনের অংশে শিশুপার্ক তৈরির কাজ চলছে। চার–পাঁচজন শ্রমিককে সেখানে কাজ করতে দেখা গেছে। পার্কটির পূর্ব দিকেই বিশাল আকৃতির একটি পুকুর রয়েছে। স্থানীয় লোকজনের অনেকেই সেখানে আড্ডা দিচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে এমদাদুল হক নামের এক যুবক বলছেন, পুকুরপাড়ে পার্ক হলে তা উপভোগ্য হবে।

স্থানীয় লোকজন বলছেন, পার্কটি নির্মাণের আগে সেখানে স্টাফ কোয়ার্টারের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যের বসবাসের জন্য একটি ভবন ছিল। ওই ভবন ভেঙেই পার্কটির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। পার্ক সংস্কারের কাজ শেষ হলে স্টাফ কোয়ার্টারে বসবাসরত বাসিন্দারা এর সুফল পাবেন। তবে সংস্কারকাজ নিয়ে কয়েকজন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেখানকার এক বাসিন্দা বলেন, সংস্কারকাজ শুরুর পর মাঝেমধ্যে কাজ বন্ধ রাখা হতো। বন্ধ না রেখে কাজটি করা হলে আরও আগেই এর কাজ শেষ হতো।

এ প্রসঙ্গে পার্কটির সংস্কারকাজের তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত অঞ্চল-৫–এর উপসহকারী প্রকৌশলী আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আনসার সদস্যরা যে ভবনে থাকতেন, সেই ভবনটি সংস্কার করেই পার্ক নির্মাণের চিন্তাভাবনা ছিল। কিন্তু ভবনটি জরাজীর্ণ হওয়ায় তা ভেঙে নতুন করে ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে কিছুটা সময় লেগেছে। তাই যথাসময়ে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি।