জমজমাট চট্টগ্রামের বাণিজ্য মেলা
চট্টগ্রামের বাণিজ্য মেলা জমে উঠেছে। মেগা প্যাভিলিয়ন থেকে স্টল—সবখানে দর্শনার্থীদের ভিড়। চলছে জমজমাট বেচা–বিক্রি। ক্রেতাদের আকর্ষণে নানা ছাড় দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো।
গতকাল রোববার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড মাঠে বাণিজ্য মেলা ঘুরে এই চিত্র দেখা যায়। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে চট্টগ্রাম নগর ও জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছে লোকজন।
মেলায় মূল প্রবেশ ফটকের একটু পরেই পারটেক্স ফার্নিচারের মেগা প্যাভিলিয়ন। ক্রেতা আকর্ষণে দৃষ্টিনন্দনভাবে সাজানো হয়েছে এই প্যাভিলিয়ন। নিচতলা ও দোতলায় রাখা আছে নানা ধরনের আসবাবসামগ্রী। প্রায় আড়াই শ ধরনের পণ্য আছে এই প্যাভিলিয়নে। এতে যেমন আছে সোফা সেট, তেমনি রয়েছে বিচিত্র নকশার নানা আকারের খাট। আছে অফিস ও শিল্পকারখানার আসবাব। ডাইনিং টেবিল, পড়ার টেবিল, জুতা রাখার র্যাক আছে এই প্যাভিলিয়নে। আসবাবগুলোর সঙ্গে মিলিয়ে রাখা হয়েছে নানা শো কেসও। এসব আসবাব তৈরি করা হয়েছে কাঠ, স্টিল, বি–নাইল বোর্ডে।
প্যাভিলিয়নে আসা লোকজন এসব আসবাব যেমন দেখছিলেন, তেমনি কেনার জন্য বুকিং দিচ্ছিলেন। নগরের মাস্টারপোল থেকে স্ত্রীকে নিয়ে এসেছিলেন ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শরীফ। তিনি বলেন, পারটেক্সে নানা ধরনের নকশার আসবাবসামগ্রী পাওয়া যায়। এগুলোর মান নিয়েও তেমন কোনো প্রশ্ন নেই। তাই ঘরের জন্য খাট ও সোফা সেট নিচ্ছেন।
পারটেক্স ফার্নিচার শোরুমের ইনচার্জ টিটন কান্তি ভৌমিক জানান, বেডরুম, ড্রয়িং রুম, ডাইনিং রুম, অফিস ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাসপাতাল, শিক্ষা–সহায়কসহ সব ধরনের ফার্নিচার পাওয়া যাচ্ছে। সর্বনিম্ন ২০ হাজার টাকায় খাট, ৪২ হাজার টাকায় ডাইনিং টেবিল ও ৪২ হাজার টাকায় সোফা সেটসহ বিভিন্ন ধরনের আসবাবসামগ্রী সাশ্রয় মূল্যে পাওয়া যাচ্ছে। এবার মেলা উপলক্ষে সব ফার্নিচারেই সর্বোচ্চ ১৬ শতাংশ ছাড় দেওয়া হচ্ছে।
পারটেক্সের মতো ভিড় ছিল আরএফএলের প্যাভিলিয়নে। এখানে গৃহস্থালির সব ধরনের প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাওয়া যাচ্ছে। এখানে তুলনামূলকভাবে নারীদের ভিড় ছিল বেশি।
আরএফএলের ব্যবস্থাপক রুহুল ইমতিয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, এবারের মেলায় ক্রেতাদের কাছ থেকে ভালো সাড়া পাচ্ছেন। তাঁদের প্যাভিলিয়নে একটি ঘর সাজানোর জন্য যা যা প্রয়োজন তার সবই আছে। তাই ক্রেতাদের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। মেলায় বিভিন্ন পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ ছাড় দেওয়া হচ্ছে।
মেলা ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতারা তাঁদের পছন্দ পণ্য কেনার জন্য স্টলে স্টলে ঘুরছিলেন। পণ্যের দরদাম নিয়ে বিক্রেতাদের সঙ্গে দরদাম করছিলেন। এই মেলায় পোশাক, জুতা, চামড়ার তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র, ফুল, গহনাসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য পাওয়া যাচ্ছে।
নগরের হালিশহর থেকে আসা গৃহবধূ হোসনে আরা বলেন, এই মেলায় সব ধরনের জিনিস পাওয়া যায়। প্রতিবছর এই মেলার জন্য অপেক্ষায় থাকেন। এখান থেকে ঘরের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য কিনে নেন।
৬ মার্চ থেকে নগরের রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড মাঠে শুরু হয় মাসব্যাপী এ মেলা। মেলায় বাংলাদেশসহ চারটি দেশের ৪৫০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। অন্য তিন দেশ হলো ভারত, থাইল্যান্ড ও ইরান। প্রায় চার লাখ বর্গফুটের আয়তনের এ মেলা খোলা থাকছে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।