চার বছর ধরে এক্স-রে মেশিন বিকল, দুর্ভোগ

স্থানীয় লোকজন জানান, বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, স্বাস্থ্য বিভাগসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালেও নতুন এক্স–রে মেশিন সরবরাহ বা পুরোনোটিই মেরামত করার বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালের মে মাসে এক্স–রে মেশিনটি বরাদ্দ দেয় স্বাস্থ্য বিভাগ। ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে লোক নিয়োগ হলে তা চালু করা হয়। চালুর দুই মাস পর মার্চ মাসে মেশিনটি প্রথম সমস্যা দেখা দেয়। ওই মাসেই এটি মেরামত করা হয়। এরপর ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিকে মেশিনটি আবার বিকল হলে তা মেরামত করতে ওই মাসেই স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়। পরের মাসে সেখান থেকে পাঠানো মেরামতকারিরা এসে জানান মেশিনটির কন্ট্রোল বোর্ড (এসডি বোর্ড) নষ্ট। এর পর থেকে ৩০০ মিলি এম্পিয়ারের এই এক্স–রে মেশিনটি এভাবেই পড়ে আছে।

সম্প্রতি বেলা ১১টার দিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, বহির্বিভাগে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রায় ৩৫ জনের মতো রোগী এসেছেন চিকিৎসা নিতে। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে চিকিৎসক এক্স–রে করানোর পরামর্শ দিয়েছেন।

ওই রুগীদের মধ্যে উপজেলার দেওপুর গ্রামের সালাহ উদ্দিন খান বলেন, ‘অটোরিকশা থেকে পড়ে গিয়ে হাঁটুতে ব্যথা পেয়েছি। চিকিৎসক এক্স–রে করাতে বলেছেন। কিন্তু এখানে এক্স–রে করার সুযোগ নেই। তাই বাধ্য হয়ে জেলা শহরের প্রাইভেট ক্লিনিকে যেতে হচ্ছে।’

একই উপজেলার প্রেমনগর গ্রামের বাসিন্দা উত্তম সরকার বলেন, ‘বুকে ব্যথার জন্য চিকিৎসক তাঁকে এক্স-রে করাতে বলেছেন। হাসপাতালের এক্স–রে মেশিন নষ্ট থাকায় তিনি জেলা শহরের সোক্তারপাড়া এলাকা থেকে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ৬৫০ টাকা দিয়ে এক্স–রে করিয়েছেন। অথচ সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই এক্স-রে করাতে ৭০ থেকে ৮০ টাকার মতো খরচ হয়।’

বারহাট্টা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মানিক আজাদ বলেন, হাসপাতালের একমাত্র এক্স-রে মেশিনটি নষ্ট থাকায় নেত্রকোনা শহরে গিয়ে রোগীদের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এক্স-রে করাতে হচ্ছে। এতে পাঁচ–ছয় গুণ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে। এ বিষয়ে বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বেশ কয়েকবার লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। গত মাসেও প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান মিলবে।