'কন্ডাক্টর ইচ্ছে করেই বাস চালিয়ে দিয়ে আবরারকে মেরে ফেলেন'

আবরার আহমেদ চৌধুরী
আবরার আহমেদ চৌধুরী

রাজধানীর নর্দ্দায় সুপ্রভাত পরিবহনের বাসের চাপায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরী নিহত হওয়ার ঘটনায় করা মামলায় দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন বাসটির কন্ডাক্টর ইয়াছিন আরাফাত ও চালকের সহকারী মো. ইব্রাহিম। গতকাল মঙ্গলবার তাঁরা স্বীকারোক্তিমূলক এই জবানবন্দি দেন।

গত ১৯ মার্চ সুপ্রভাত পরিবহনের বাসের চাপায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সামনে নর্দ্দায় আবরার নিহত হন। এর প্রতিবাদে ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। ওই ঘটনায় আবরারের বাবা গুলশান থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

ডিবি সূত্র বলেছে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক কাজী শরীফুল ইসলাম গতকাল সুপ্রভাত পরিবহনের বাসের কন্ডাক্টর ইয়াছিন আরাফাত ও চালকের সহকারী ইব্রাহিমকে সাত দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করে তাঁদের জবানবন্দি গ্রহণের আবেদন জানান। ঢাকার মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরী তাঁর খাসকামরায় ইয়াছিনের ও মহানগর হাকিম সরাফুজ্জামান গ্রহণ করেন ইব্রাহিমের জবানবন্দি। পরে দুজনকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, ১৯ মার্চ বিইউপির শিক্ষার্থী আবরারকে চাপা দেওয়ার সময় বাসটি চালাচ্ছিলেন কন্ডাক্টর ইয়াছিন আরাফাত। ওই ঘটনার কিছুক্ষণ আগে বাসটির মূল চালক গুলশানের শাহজাদপুরে কলেজছাত্রী সিনথিয়া সুলাতানাকে চাপা দেওয়ায় ট্রাফিক পুলিশের হাতে আটক হন। ওই ঘটনায় গুলশান থানায় হওয়া মামলায় সিরাজুলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তিনি ২৮ মার্চ নিজের দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

মামলা দুটির তদন্ত তদারক কর্মকর্তা ডিবির উপকমিশনার মশিউর রহমান গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সেদিন প্রথম ঘটনার ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে। তাই আবরার হত্যা মামলায় বাসটির চালক সিরাজুল দায় এড়াতে পারেন না। তাঁকে অভিযোগপত্রভুক্ত করা হবে। কন্ডাক্টর ইয়াছিন ইচ্ছে করেই বাস চালিয়ে দিয়ে আবরারকে মেরে ফেলেছেন। তাঁর ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং বাসটির রুট পারমিট ছিল না বলে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। চালকের সহকারী ইব্রাহিম দুটি ঘটনায় ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করেননি।

ডিবির ওই কর্মকর্তা বলেন, বাসটির মালিক ননী গোপাল সরকারকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। আবরার হত্যা মামলায় বাসের মালিক, চালক, কন্ডাক্টর ও চালকের সহকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হচ্ছে। সিনথিয়াকে আহত করার ঘটনায় গুলশান থানায় করা অপর মামলায় ওই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।