সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা, ২৭ রোহিঙ্গা উদ্ধার

উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গা সমুদ্রপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। রয়টার্স ফাইল ছবি
উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গা সমুদ্রপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। রয়টার্স ফাইল ছবি

সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টাকালে কক্সবাজারের টেকনাফে ২৭ রোহিঙ্গা নাগরিককে উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা। তাদের মধ্যে ৮টি শিশু, ১৬ জন নারী ও ৩ জন পুরুষ রয়েছেন। তারা সবাই উখিয়ার বালুখালী ও কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরে বসবাসকারী মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক।

গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টায় সাবরাং কাটাবুনিয়া ও আজ বুধবার ভোর পাঁচটার দিকে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মহেষখালীয়া পাড়া সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়। তাঁরা সমুদ্রপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ ২ বিজিবির ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গতকাল মঙ্গলবার রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় শিশু, নারী ও পুরুষের একটি দল সাবরাং ইউনিয়নের সমুদ্র উপকূল এলাকা কাটাবুনিয়ায় জড়ো হচ্ছেন। খবর পেয়ে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৪ জনকে উদ্ধার করা হলেও কোনো দালালকে আটক করা যায়নি। তাদের মধ্যে ৬টি শিশু, ৭ জন নারী ও ১ জন পুরুষ আছেন।

অপরদিকে আজ ভোরে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মহেষখালীয়া পাড়া সমুদ্র উপকূলীয় এলাকা থেকে আরও ১৩ জনকে উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে ২টি শিশু, ৯ জন নারী ও ২ জন পুরুষ আছেন।

উদ্ধার করা নারী ও পুরুষদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানান, ওই এলাকায় তাঁরা নৌকার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তাঁরা উখিয়ার বালুখালী ও কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের বাসিন্দা। মালয়েশিয়ায় পাঠানোর জন্য গভীর সমুদ্রে তাদের জন্য একটি বড় জাহাজ নোঙর করা আছে। সেটিতে তাদের তুলে দেওয়ার কথা বলে দালালেরা তাদের সমুদ্র উপকূলে নিয়ে আসেন। উদ্ধার করা এসব রোহিঙ্গা নাগরিকদের স্ব স্ব শরণার্থীশিবিরে পাঠানোর কাজ চলছে।

রোহিঙ্গা নাগরিকদের বরাত দিয়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তাঁরা সবাই মালয়েশিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। অনেক নারী বিয়ের আশায়, কেউ কেউ আগে থেকে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করা স্বজনের কাছে যাওয়ার জন্য এবং অনেকে ভালো চাকরির আশায় মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছেন।

চলতি বছর বিজিবি, পুলিশ ও কোস্টগার্ড সদস্যরা সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টাকালে সর্বশেষ আজ ৩ এপ্রিল পর্যন্ত নয় দফায় রোহিঙ্গা শিশু, নারী ও পুরুষসহ ১৫৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এসব ঘটনায় আরও ১৩ জন দালালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।