বিধবারা পেলেন নববর্ষের উপহার

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে স্বামী–সন্তান হারানো বেঁচে থাকা বিধবা নারীদের মধ্যে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার নববর্ষের শুভেচ্ছা হিসেবে উপহারসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। সকালে পুলিশ সুপার (এসপি) আশরাফুল আজিম বিধবাপল্লিতে উপস্থিত হয়ে এই সামগ্রী নারীদের হাতে তুলে দেন।

পুলিশ ও সোহাগপুর বিধবাপল্লি কল্যাণ সমিতি সূত্র জানায়, আসছে নতুন বছর। নতুন বছরকে বরণ করতে মানুষ নানা রঙের পোশাক পরে। পান্তা–ইলিশ খেয়ে নতুন বছরের শুভ সূচনা করে। কিন্তু এই আনন্দ থেকে যেন সোহাগপুরের বিধবাপল্লির নারীরা বঞ্চিত না হন, তার জন্য এসপি আশরাফুল আজিমের সহযোগিতায় নববর্ষ উপলক্ষে তাঁদের জন্য উপহারসামগ্রী বিতরণের ব্যবস্থা করেন। সকালে এসপি আশরাফুল আজিম বিধবাপল্লিতে উপস্থিত হয়ে বেঁচে থাকা ২৬ জন নারীকে একটি করে শাড়ি, সবার জন্য বড় রুই মাছ, একটি মাটির হাঁড়িতে চিড়া, মুড়ি, বাতাসা, জুড়ি, কালাই ও অন্য হাঁড়িতে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। বিধবা নারীরা নববর্ষের উপহারসামগ্রী পেয়ে পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এ সময় শেরপুর সার্কেলের অতিরিক্ত সহকারী পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম, নালিতাবাড়ী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম, নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ, নালিতাবাড়ী থানার ওসি তদন্ত সারোয়ার হোসেনসহ পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালে ২৫ জুলাই সোহাগপুর গ্রামে গণহত্যা চালানো হয়। এ সময় পাকিস্তানি হানাদার ও দেশীয় রাজাকাররা এই গ্রামের ১৮৭ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। বেনুপাড়ার সব পুরুষকে মেরে ফেলায় স্বাধীনতার পর পাড়াটির নাম বদলে বিধবাপল্লি হিসেবে পরিচিতি পায়। এ সময় ৬২ জন নারী বিধবা হন। তাঁদের মধ্যে বেঁচে আছেন ২৬ জন নারী। তখন নির্যাতনের শিকার হওয়ায় ১১ জন নারীকে সরকার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেয়।