ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে কার্যক্রম নয়

পটুয়াখালীর পশ্চিম গাবুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ব্যবহারের অনুপযোগী।  প্রথম আলা
পটুয়াখালীর পশ্চিম গাবুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ব্যবহারের অনুপযোগী। প্রথম আলা

বরগুনায় ছাদ ধসে ছাত্রী নিহত হওয়ার পর পটুয়াখালী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় গত দুদিন ধরে মুঠোফোনে খুদে বার্তায় জেলার ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম না চালানোর নির্দেশনা দিয়েছে। এ ছাড়া নতুন করে বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা তৈরির কাজ শুরু করা হয়েছে।

জেলায় ২৭২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। নতুন ভবন নির্মাণ না হওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই পড়াশোনা চলছে। ৬ এপ্রিল পার্শ্ববর্তী বরগুনার তালতলীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনের ছাদ ধসে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রী নিহত হয়। এ অবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক বেড়ে যায়।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় জানায়, জেলায় মোট ১ হাজার ২২৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ২০১৮ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত তথ্যমতে জেলার ১ হাজার ২২৫টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ২৭২টি বিদ্যালয়ের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ১২৩টি এবং মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ ১৪৯টি বিদ্যালয়ের ভবন।

গতকাল সোমবার সদর উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের পশ্চিম গাবুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলের একতলা ভবনের একটি কক্ষের ছাদ ভেঙে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। দরজা-জানালা বিধ্বস্ত, কলামে ফাটল ধরেছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক জুলেখা আক্তার জানান, ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এই স্কুল। চার কক্ষের স্কুলটি ২০১৩ সালে জাতীয়করণ করা হয়। তিন বছর আগে স্কুলভবন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। স্কুলের পাঠদান কার্যক্রম বিকল্প স্থানে চালিয়ে নেওয়ার জন্য স্কুলের পাশেই শিশু শিক্ষার্থীর জন্য টিনের ঘর তুলে পড়াশোনার ব্যবস্থা করা হয়।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাগরিকা রাহা বলেন, বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান বন্ধসহ ব্যবহার না করার জন্য বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যবহারের অনুপযোগী বিদ্যালয় ভবনের তালিকা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ছাইয়াদুজ্জামান বলেন, জেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান না করানোর জন্য মুঠোফোনে সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি চিঠি পাঠানোর কাজও চলছে। এ ছাড়া নতুন করে বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা তৈরি করার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি এসেছে। ১৫ দিনের মধ্যে তালিকা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর নির্দেশনা রয়েছে।