কুমিল্লা ইপিজেডের সুতার কারখানায় আগুন

কুমিল্লার আর এন স্পিনিং মিলে লাগা আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ইপিজেড, কুমিল্লা, ৯ এপ্রিল। ছবি: এমদাদুল হক
কুমিল্লার আর এন স্পিনিং মিলে লাগা আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ইপিজেড, কুমিল্লা, ৯ এপ্রিল। ছবি: এমদাদুল হক

কুমিল্লা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকার (ইপিজেড) সুতার কারখানা আর এন স্পিনিং মিলস লিমিটেডে গতকাল সোমবার রাতে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট রাতভর চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। তবে আগুনে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

গতকাল রাত সাড়ে নয়টার দিকে আগুনের সূত্রপাত। এ সময় কারখানার দ্বিতীয় শিফটের কর্মচারীদের কাজ শেষ হওয়ায় তৃতীয় শিফটের কর্মচারীরা কাজে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ইপিজেডের ফায়ার সার্ভিস, কুমিল্লা, বরুড়া, চৌদ্দগ্রাম, চান্দিনাসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে অন্তত ১০টি ইউনিটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। সুতার কারখানা হওয়ায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আজ ভোর ছয়টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

রাতে অগ্নিনির্বাপণের কাজ তদারকি করেন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর, জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম ও ইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক হাফিজুর রহমান।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কারখানার মেশিন পুড়ে গেছে, সুতা পুড়ছে। স্থাপনার দেয়াল ধসে পড়েছে। স্টিলের তৈরি স্থাপনা আগুনে পুড়ে গেছে। ইপিজেডের ১০০ থেকে ১০৭ এবং ১২৭ থেকে ১৩৪ প্লট নিয়ে আর এন স্পিনিং মিল। কারখানার মেশিনারিজ ও সুতা পুড়ে গেছে। তবে জেনারেটর, কাঁচামাল, সাবস্টেশন ও আরেকটি গুদাম অক্ষত আছে।

আর এন স্পিনিং মিলস লিমিটেডের উপমহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) শহীদুল হক বলেন, কারখানার মূল্যবান সব মেশিনই পুড়ে গেছে। তবে কেউ হতাহত হয়নি। ১৬টি ব্লকের কারখানায় শর্টসার্কিট ছাড়া আগুন লাগার কোনো সুযোগ নেই। এখানে রান্নাঘরও নেই।

কুমিল্লা ইপিজেডের বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক শিবু রঞ্জন দাস বলেন, এই কারখানায় তুলা থেকে সুতা বানানো হয়। ২০০৬-০৭ সালের দিকে এই কারখানা প্রায় আট একর জায়গা নিয়ে ১৬টি প্লটের ওপর নির্মিত হয়। কুমিল্লা ইপিজেডের ৪৭টি দেশি ও বিদেশি কারখানার মধ্যে আর এন স্পিনিং মিলস লিমিটেডে দেশীয় একটি কারখানা। কারখানার মালিক বরিশালের আবদুল কাদের ফারুক বর্তমানে দেশের বাইরে আছেন। এখানে ১ হাজার ২০০ জন শ্রমিক কাজ করেন। গতকাল রাত ১০টার শিফটে ৩০০ শ্রমিক কাজে আসার কথা। এরই মধ্যে আগুন লাগে।

ফায়ার সার্ভিসের কুমিল্লা শাখার সহকারী পরিচালক রতন কুমার নাথ বলেন, ‘কারখানায় তুলা ও সুতা থাকায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এখানে পানির অভাব থাকায় বিকল্প পথে পানি আনতে হয়েছে। আমরা মূল আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শেষ করে ফেলেছি।’