নবাবগঞ্জে ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি

ছিল ফসলের খেত। হয়ে গেছে রাস্তা। এই পথে কেটে নেওয়া হচ্ছে ফসলি জমির মাটি। সোমবার সকালে নবাবগঞ্জের দিঘিরপাড় চকে।  প্রথম আলো
ছিল ফসলের খেত। হয়ে গেছে রাস্তা। এই পথে কেটে নেওয়া হচ্ছে ফসলি জমির মাটি। সোমবার সকালে নবাবগঞ্জের দিঘিরপাড় চকে। প্রথম আলো

ঢাকার নবাবগঞ্জে কৃষিজমি থেকে মাটি কেটে নিচ্ছেন কিছু মাটি ব্যবসায়ী। এতে জমির উর্বরাশক্তি নষ্ট এবং মাটি পরিবহনের সময় আশপাশের ফসলের ক্ষতি হচ্ছে।

গত সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার দিঘিরপাড় ও দোহারের ঘাটা মৌজার ফসলি জমির মাটি এক্সকাভেটর (খননযন্ত্র) দিয়ে কেটে বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন ইটের ভাটায়। অন্যের ফসলি জমির ওপর তৈরি করা হয়েছে ট্রাক্টর চলাচলের রাস্তা।

দিঘিরপাড়ের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক জামাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার জমির ওপর দিয়ে চলছে মাটি টানার গাড়ি। কোনো কথাই শুনছে না মাটি ব্যবসায়ীরা। বাধা দিলে নানা ধরনের হুমকি দেয়। নিজের জমিতেই এখন চাষ করতে পারছি না।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শহীদুল আমিন বলেন, জমির উপরিভাগের চার থেকে ছয় ইঞ্চি মাটিতেই মূলত পুষ্টিগুণ থাকে। তাই ওপরের অংশ কেটে নিলে দীর্ঘ সময়ের জন্য কৃষিজমি অনুর্বর হয়ে পড়ে। স্বাভাবিকভাবেই ফসলের উৎপাদন কমে যায়।

অভিযোগ আছে স্থানীয় আনু ব্যাপারী ও সুমন ব্যাপারী মাটির ব্যবসা করছেন। তাঁরা অনেক কৃষককে ভুল বুঝিয়ে অল্প টাকায় জমির মাটি কিনে নিচ্ছেন। এতে ওই জমির ক্ষতি হচ্ছে। পাশাপাশি ট্রাক্টরে করে মাটি নেওয়ার সময় অন্য জমির ফসলের ক্ষতি হচ্ছে।

জমির মালিক মাটি বিক্রেতা সুমন বলেন, ‘আমরা মাটি বিক্রি করে দিতেছি।’ প্রশাসনের অনুমতি আছে কি না, জানতে চাইলে বলেন, ‘আনু ও সেন্টুরা মাটি কিনে নিয়েছে। ওরা বলছে, আমরা যেখানে যা লাগে সব ঠিক করে নেব।’ মাটি ব্যবসায়ী আনু ব্যাপারী বলেন, ‘আমি এখন মাটির ব্যবসা করি না, আগে করতাম।’ এখন মাটি কাটার সঙ্গে কে কে জড়িত জানতে চাইলে তিনি বলেন সেন্টু এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রয়েছে। তবে সেন্টুকে এলাকায় খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শহীদুল আমিন বলেন, ‘আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেব।’ এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ফসলি জমির মাটি কাটা বন্ধে খুব দ্রুত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।