কোস্টগার্ডের অভিযানে পাঁচ লাখ ইয়াবা আটক

জব্দ ইয়াবা বড়ি। ফাইল ছবি
জব্দ ইয়াবা বড়ি। ফাইল ছবি

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন গভীর বঙ্গোপসাগরে কোস্টগার্ড বিশেষ অভিযান চালিয়ে পাঁচ লাখ ইয়াবা, দুটি ট্রলার এবং চালানের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে দুজনকে আটক করেছে। গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে নিজামপুর, পায়রা বন্দর ও ভোলা জোনের কোস্টগার্ড সদস্যরা যৌথ অভিযান চালিয়ে ইয়াবার এ বিশাল চালান জব্দ করেন।

এ সময় মোশাররফ হোসেন সিকদার (৫০) ও তাঁর চাচাতো ভাই টিপু সিকদারকে (৩২) আটক করা হয়। তাঁদের বাড়ি কলাপাড়া উপজেলার নিশানবাড়িয়া গ্রামে।

কোস্টগার্ডের ভাষ্য, ইয়াবা পরিবহনের জন্য অস্ত্রের মুখে ১৩ জন নিরপরাধ জেলেকে একটি ট্রলারসহ জিম্মি করে রেখেছিলেন ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। কোস্টগার্ড সদস্যরা ট্রলারসহ জেলেদের উদ্ধার করেছে।

এ বিষয়ে আজ বুধবার সকালে কলাপাড়ার নিজামপুর কোস্টগার্ড স্টেশনে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং করেন কোস্টগার্ডের স্টাফ অফিসার (অপারেশন) লে. কমান্ডার এম নাজিউর রহমান। তিনি বলেন, ‘গোপন খবরের ভিত্তিতে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে। তবে এর মূল হোতা মহিপুরের আল আমিন, জহিরুল ইসলাম, মো. সালাহ উদ্দিন, বেল্লাল হোসেন ও সোহরাব হোসেনসহ বেশ কয়েকজন পালিয়ে গেছেন।’

কোস্টগার্ডের ভাষ্য, কক্সবাজার ও টেকনাফে পুলিশ, র‌্যাব, নৌপুলিশ এবং কোস্টগার্ডের কঠোর অভিযানের কারণে এ রুট ব্যবহার করছেন ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে এ ব্যবসার সঙ্গে কুয়াকাটা, আলীপুর ও মহিপুরের এক শ্রেণির মৎস্যজীবী জড়িয়ে পড়েছেন। তাঁদের শনাক্তের কাজ চলছে বলেও কোস্টগার্ড সূত্র নিশ্চিত করেছে।

কোস্টগার্ডের অভিযানে আটক মোশাররফ হোসেন সিকদার বলেন, টেকনাফ থেকে এই ইয়াবা ট্রলারে করে নিয়ে আসা হয়। কুয়াকাটা, মহিপুর, আলীপুর ও কলাপাড়ায় আগামী রোববার এগুলো খালাস করার কথা ছিল। কিন্তু ইয়াবা বহনকারী ট্রলারটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। মোশাররফ তখন মহিপুর মৎস্য বন্দরে গিয়ে এফবি আলাউদ্দিন ট্রলারের ১৩ জেলেকে তাঁদের ট্রলারটি পাড়ে নেওয়ার জন্য মোটা অঙ্কের টাকার লোভ দেখান। আলাউদ্দিন ট্রলারের জেলেরা এতে রাজি হয়ে সাহায্যের জন্য ট্রলারটির কাছে যান।

এফ বি আলাউদ্দিন ট্রলারের জেলে জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারিনি ট্রলারে কী আছে। আমরা সরল মনে ট্রলার নিয়ে নষ্ট ট্রলারের কাছে যাই। তখন ওই ট্রলারের লোকজন অস্ত্রের মুখে আমাদের জিম্মি করে মারধর করতে থাকে। একপর্যায়ে নষ্ট ট্রলারটি আমাদের ট্রলারটির সঙ্গে বেঁধে তাদের নির্দেশ মতো চালাতে বাধ্য করে। কিছুক্ষণ পর কুয়াকাটা সংলগ্ন গভীর সাগরে টহলে থাকা কোস্টগার্ড সদস্যরা ধাওয়া করে ট্রলারসহ সবাইকে আটক করে। তবে ট্রলারটি চরে আটকে যাওয়ায় মূল হোতা আল আমিনসহ ছয়জন পালিয়ে যান।’