ইউএনও ও শিক্ষা কর্মকর্তার ফোন নম্বর 'ক্লোন' করে চাঁদাবাজির অভিযোগ

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহাত মান্নান ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল বারীর মোবাইল ফোন নম্বর ‘ক্লোন’ করে চাঁদাবাজি ও প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফোন দিয়ে ল্যাপটপ দেওয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তবে প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের বুদ্ধিমত্তায় প্রতারক চক্র তা করতে ব্যর্থ হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল, সন্ধ্যা ও রাতে এসব ঘটনা ঘটেছে।

ইউএনও রাহাত মান্নান প্রতারণার বিষয়টি আলমডাঙ্গা থানা–পুলিশকে জানিয়েছেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান মুন্সী মৌখিকভাবে অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে বুধবার এ খবর লেখা পর্যন্ত প্রতারক চক্রকে শনাক্ত করা যায়নি।

আলমডাঙ্গার বড়গাংনী ইউনিয়নের চিৎলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেদী রেজা জানান, মঙ্গলবার রাত পৌনে আটটার দিকে ইউএনও রাহাত মান্নানের নম্বর থেকে একটি ফোন আসে। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে ইউএনও পরিচয়ে জানানো হয়, উপজেলায় মোট সাতটি ল্যাপটপ বরাদ্দ পাওয়া গেছে। যার চারটি বিতরণ করা হয়েছে। একই ব্যক্তি আরেকটি নম্বর থেকে ফোন করে জানান, ল্যাপটপটি পেতে হলে সাত হাজার টাকা বিকাশ করতে হবে। মেহেদী রেজা বলেন, ‘ইউএনও পরিচয় দিলেও কণ্ঠ সন্দেহজনক হওয়ায় প্রতারণার আশঙ্কায় আমি সরাসরি না বলে দিই। পরে সহকর্মীদের মাধ্যমে বিষয়টি ইউএনওকে অবহিত করি।’

এর আগে বিকেলে আলমডাঙ্গা শহরের ব্রাইট মডেল স্কুলের পরিচালক জাকারিয়া হিরোর কাছে ইউএনওর ক্লোন নম্বর থেকে ফোন করে জানানো হয়ে, লক্ষাধিক টাকা মূল্যের একটি ল্যাপটপ দেওয়া হবে। এ জন্য তাঁকে (জাকারিয়া হিরো) ৪০ হাজার টাকা দিতে হবে। জাকারিয়া প্রথমে জানান, প্রতিষ্ঠানের ও ব্যক্তিগত ল্যাপটপ আছে। তাই তিনি নেবেন না। এ কথা শুনে ফোনের অপর প্রান্ত থেকে ইউএনও পরিচয়দানকারী ব্যক্তি ১০ হাজার টাকা বিকাশ করে অফিস থেকে ল্যাপটপ নিতে বলে ফোন কেটে দেন। কিছুক্ষণ পরে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নম্বর থেকে ফোন আসে এবং বলা হয়, ইউএনওর কথামতো টাকা দিতে।

জাকারিয়া হিরো প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইউএনও ও শিক্ষা অফিসার পরিচয়দানকারী দুজনের কণ্ঠ নিয়ে সন্দেহ দেখা দেয়। কিছুক্ষণ পরে ওই দুই কর্মকর্তাকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানালে প্রতারণার বিষয়টি পরিষ্কার হয়।’

হাটবোয়ালিয়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলীর মোবাইলে ফোন করে একই কায়দায় চাঁদাবাজি ও প্রতারণার চেষ্টা করা হলেও সেখানেও প্রতারক চক্র ব্যর্থ হয়।

ইউএনও রাহাত মান্নান বলেন, মোবাইল নম্বর ক্লোন করে চাঁদাবাজি ও প্রতারণার বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে ওসিকে জানানো হয়েছে। এ ধরনের ঘটনার বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে আহ্বান জানানো হয়েছে।