মাদারীপুরে বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেল চার কিশোরী

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এক দিনে চারটি বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেল চার কিশোরী। গতকাল বুধবার বিকেলে ও রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারটি বাল্যবিবাহ বন্ধ করেন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহানা নাসরিন। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তিন কনের অভিভাবককে আর্থিক জরিমানা করা হয়।

উপজেলা প্রশাসন ও ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেলে উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নের কাশিমপুর গ্রামের ফারুক খানের মেয়ে এবং স্থানীয় মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্রীর (১৩) বিয়ের আয়োজন করা হয়। এ খবর পেয়ে ওই এলাকায় অভিযান চালায় উপজেলার প্রশাসন। পরে বিয়ে বন্ধ করে পরিবারের কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়। একই দিন উপজেলার ইশিবপুর এলাকায় মো. মজিবর কারিকরের মেয়ে ও ইশিবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীর (১২) বিয়ের আয়োজন চলছিল। খবর পেয়ে বিয়ে বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। পরে ওই কিশোরীর বাবাকে পাঁচ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ছাড়া ১৮ বছরের আগে তাঁর মেয়ের বিয়ে দেবেন না, এ মর্মে একটি মুচলেকা নেওয়া হয়।

গতকাল রাতে উপজেলার আমগ্রামের মনিমোহন বৈদ্যর মেয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী (১৩) ও একই এলাকার হরিপদ ওঝার দশম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ের বিয়ের প্রস্তুতি চলছিল। এমন সংবাদ পেয়ে ওই দুটি বিয়ে বাড়িতে ইউএনও পুলিশ নিয়ে হাজির হয়ে বিয়ের আয়োজন বন্ধ করে দেন। এ সময় ওই দুই কিশোরীর বাবাকে আটক করে উপজেলায় নিয়ে আসা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাঁদের প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে ১০ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। দুই কিশোরীর উভয়ের বাবার কাছ থেকে ১৮ বছর আগে তাঁদের মেয়ের বিয়ে দেবেন না, এমন মুচলেকা নেন আদালত।

জানতে চাইলে রাজৈর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহানা নাসরিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাল্যবিবাহের কুফল জানাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব সময়ই প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এরপরেও কোথায় যদি বাল্য বিয়ের আয়োজন করা হয়, সেখানে আমরা অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায় ও মুচলেকা নিয়ে সেই বিয়ে বন্ধ করি। আমরা গত দুই মাসে এ রকম আরও ১৫টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পুলিশ নিয়ে কনের বাড়িতে হাজির হলেই বর পালিয়ে যায়। আবার বর পক্ষের লোকজন আগেই খবর পেয়ে তারা কনের বাড়িতে আসে না। আমরা বরের বাবা বা বরকে পেলে সঙ্গে সঙ্গে কারাদণ্ড দিয়ে দেব। চারটি বিয়ের আসরে একটিতেও বরকে পাইনি।’