কর্মকর্তাদের মুঠোফোন নম্বর ক্লোন করে চাঁদাবাজির চেষ্টা

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার পর এবার আরও তিন সরকারি কর্মকর্তার মুঠোফোন নম্বর ‘ক্লোন’ করে চাঁদাবাজি ও প্রতারণার চেষ্টা করা হয়েছে। প্রায় অর্ধশত প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের কাছে ফোন করে দামি ল্যাপটপ দেওয়ার প্রলোভন দেখানো হয়েছে।

এবার যাঁদের মুঠোফোন নম্বর ক্লোন করা হয়েছে তাঁরা হলেন—জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.সাইফুল ইসলাম, দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) রফিকুল হাসান ও জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সিরাজুল ইসলাম।

বুধবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে ফোন করে ল্যাপটপ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে চাঁদাবাজি ও প্রতারণার চেষ্টা চালায় একটি চক্র। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কণ্ঠের সঙ্গে মিল না পাওয়ায় প্রতারক চক্র তেমন সুবিধা করতে পারেনি। তবে মুঠোফোন নম্বর ক্লোন করে চাঁদাবাজির এসব ঘটনায় কর্মকর্তারা বিব্রত।

ইউএনও সিরাজুল ইসলাম বলেন, ওই ঘটনা জানতে পেরে উপজেলার সব প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছে মুঠোফোনে বার্তা পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ফোন করার সময় যেসব বিকাশ নম্বর দেওয়া হয়েছে, ওই নম্বর উল্লেখ করে জীবননগর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি।’

দামুড়হুদার ইউএনও রফিকুল হাসান বলেন, ঘটনাটি জানার পর থেকে চরম বিব্রত বোধ করছেন। এ ধরনের কোনো ফোন কেউ পেয়ে থাকলে তা যাচাই করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করা হয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে জেলার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধানদের কাছে বার্তা পাঠানো হয়েছে। সবাইকে সজাগ থাকতে পরামর্শ দিয়েছি। এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবগত করতেও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’

এর আগে গত মঙ্গলবার আলমডাঙ্গার ইউএনও রাহাত মান্নান ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল বারীর মুঠোফোন নম্বর ‘ক্লোন’ করে প্রতারণার চেষ্টা চালায় সংঘবদ্ধ চক্রটি। যা নিয়ে বুধবার প্রথম আলোর খুলনা পাতায় ‘আলমডাঙ্গা উপজেলা: কর্মকর্তাদের ফোন নম্বর ক্লোন করে চাঁদাবাজি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

মুঠোফোন নম্বর ক্লোনের ঘটনায় জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা হয়েছে এবং প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।’

পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। দ্রুত সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্যদের ধরে আইনের আওতায় আনা হবে।