এসডিজি অর্জনে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ দরকার

এসডিজি অর্জনে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ দরকার বলে মত দিয়েছেন এক অনুষ্ঠানে বক্তারা। ছবি: সংগৃহীত
এসডিজি অর্জনে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ দরকার বলে মত দিয়েছেন এক অনুষ্ঠানে বক্তারা। ছবি: সংগৃহীত

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ দরকার। এ জন্য এসডিজির বিভিন্ন সূচকের লক্ষ্য অর্জনে সুশীল সমাজের সংগঠনগুলোকে (সিএসও) তাদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিশেষ তহবিল করা উচিত। এ ছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে এসডিজির অগ্রগতির স্বপ্রণোদিত মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বেসরকারি খাতের মূল্যায়নকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

আজ শনিবার সিটিজেনস প্ল্যাটফর্ম ফর এসডিজিস আয়োজিত দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধে এসব কথা বলা হয়। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই অনুষ্ঠান সকালে শুরু হয়েছে। দুপুর পর্যন্ত শিক্ষা, পরিবেশ, বৈষম্য, উন্নয়ন-সহযোগীদের সহায়তাবিষয়ক চারটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সারা দেশের বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন।

সকালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিটিজেনস প্ল্যাটফর্ম ফর এসডিজিসের আহ্বায়ক ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘বৈষম্য এ দেশে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এটা আমরা স্বীকার করছি। বৈষম্য কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। উন্নয়নের প্রথম দিকে বৈষম্য কিছুটা বাড়ে। এখানে ধনীরা ধনী হচ্ছে। কিন্তু যারা গরিব, তাদের অবস্থা আগের চেয়ে ভালো হয়েছে।’ তিনি আরও জানান, এসডিজি বাস্তবায়নের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এখন বাস্তবায়নের পালা।
সারা দেশ থেকে আসা এনজিও প্রতিনিধিদের উদ্দেশে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সরকারি টাকা কোথায়, কীভাবে খরচ হচ্ছে, সরকার ভুল করছে কি না, সে বিষয়ে কণ্ঠ জোরালো করুন। এটা বোঝাতে বোমা মারতে হবে না, রেললাইন তুলে ফেলতে হবে না।
সিটিজেনস প্ল্যাটফর্মের কোরগ্রুপ সদস্য ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, এসডিজি উচ্চাভিলাষী, কিন্তু অর্জনযোগ্য। সুশীল সমাজের সংগঠনগুলো এসডিজি অর্জনের পথে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করতে পারে। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জন করতে হলে মাঠপর্যায়ে কাজ করতে হবে। তিনি জানান, সিটিজেনস প্ল্যাটফর্ম ইতিমধ্যে সারা দেশে আলোচনা সভা করেছে। সেখানে প্রায় ১০০ স্থানীয় পর্যায়ের এনজিও প্রতিনিধি যোগ দিয়েছেন।
ইউএনডিপির প্রতিনিধি ও জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো বলেন, এসডিজি বাস্তবায়ন ও মূল্যায়নে অপ্রিয় সত্য কথা বলার জন্য সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সুযোগ করে দিতে হবে। টেকসই উন্নয়নে সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে কাজ করতে পারে। এসডিজির প্রাথমিক অগ্রগতির মূল্যায়নে সরকারি ও বেসরকারি খাতের প্রতিবেদনে প্রায় একই চিত্র উঠে এসেছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, তথ্য-উপাত্তের ঘাটতিসহ বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে উভয় পক্ষের প্রতিবেদনে।
সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আগামী সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘে এসডিজির ছয়টি লক্ষ্যের মূল্যায়ন করা হবে। এসডিজি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় বেসরকারি খাত, এনজিওয়ের মতো প্রতিষ্ঠানের কথা খুব একটা উঠে আসে না। তাই এসব প্রতিষ্ঠান কীভাবে এসডিজি বাস্তবায়ন-প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারে, সে জন্যই এই আয়োজন।