সাক্ষ্য দিতে এসে কাঁদলেন সাইদুর রহমানের মা

সাইদুর রহমান
সাইদুর রহমান

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ পঞ্চম সেমিস্টারের ছাত্র সাইদুর রহমান পায়েল হত্যা মামলায় তাঁর মাসহ তিনজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত। গতকাল রোববার চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মোহাম্মদ আবদুল হালিমের আদালতে এই সাক্ষ্য গ্রহণ হয়। সাক্ষীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আসামিদের বিচার চেয়ে কাঁদলেন মা কোহিনূর বেগম।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি মো. আইয়ুব খান প্রথম আলোকে বলেন, সাইদুরের মা, ভগ্নিপতি আইয়ুব আলী, হানিফ পরিবহনের কেয়ারটেকার বাবলু বেপারীসহ তিনজন সাক্ষ্যে পুরো ঘটনার বর্ণনা দেন।

সাক্ষ্যে মা কোহিনূর বলেছেন, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী হানিফ এন্টারপ্রাইজে উঠে পায়েল তাঁর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিল। কিন্তু সকালে তিনি পায়েলের ফোনে কল করলে সেটি ধরে পায়েলের বন্ধু আদর। কোহিনূর বলেন, ‘আদর আমাকে জানিয়েছে পায়েল প্রস্রাব করতে নেমে আর বাসে ওঠেনি। কাউন্টার থেকে বাসচালক ও সুপারভাইজারের নম্বর সংগ্রহ করে খোঁজ নিতে শুরু করি এবং তাঁরাও জানিয়েছেন পায়েল আর বাসে ওঠেনি। পরে গজারিয়া থানায় গেলে পুলিশ জানায় বাসচালক, হেলপার ও সুপারভাইজার মিলে পায়েলকে খুন করেছেন ।’ ওই সময় অঝোরে কাঁদছিলেন সাইদুরের মা। পরে আদালত আগামী ৫ মে পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন।

২০১৮ সালের ২১ জুলাই রাতে দুই বন্ধু আকিবুর রহমান ও মহিউদ্দিনের সঙ্গে হানিফ পরিবহনের একটি বাসে করে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার পথে রওনা হওয়ার পর নিখোঁজ হন সাইদুর। দুই দিন পর ২৩ জুলাই মুন্সিগঞ্জের ভাটেরচর সেতুর নিচের খাল থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে গজারিয়া থানা-পুলিশ। এরপর হানিফ পরিবহনের ওই বাসের সুপারভাইজার জনিকে ঢাকার মতিঝিল এবং চালক জামাল হোসেন ও তাঁর সহকারী ফয়সাল হোসেনকে আরামবাগ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সাইদুরের মামা গোলাম সরোয়ার্দী বাদী হয়ে চালক জামাল হোসেন, তাঁর সহকারী ফয়সাল হোসেন ও সুপারভাইজার জনিকে আসামি করে গজারিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে ওই বছরের ৩ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।

এতে বলা হয়, গজারিয়া এলাকায় গাড়ি যানজটে পড়ায় প্রস্রাব করার কথা বলে বাস থেকে নেমেছিলেন সাইদুর। বাস চলতে শুরু করলে তিনি দৌড়ে গিয়ে উঠার সময় দরজার সঙ্গে ধাক্কা লেগে সংজ্ঞা হারান। নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে দেখে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়ার বদলে দায় এড়াতে ভাটেরচর সেতু থেকে নিচের খালে ফেলে বাস নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন আসামিরা। গত বছরের ডিসেম্বর মুন্সিগঞ্জ আদালত থেকে মামলাটি বিচারের জন্য চট্টগ্রাম দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে আসে। ২ এপ্রিল তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এই মামলার বিচার শুরু হয়।