তারেকের সম্মতি নিয়ে শপথ নেওয়ার দাবি দুই সাংসদের

মো. হারুনুর রশীদ,মো. মোশাররফ হোসেন,মো. আমিনুল ইসলাম, উকিল আবদুস সাত্তার।
মো. হারুনুর রশীদ,মো. মোশাররফ হোসেন,মো. আমিনুল ইসলাম, উকিল আবদুস সাত্তার।

দলীয় সিদ্ধান্ত মেনেই শপথ নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন বিএনপির দুই সাংসদ। আজ সোমবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনে গিয়ে সাংসদ হিসেবে শপথ নেওয়ার পর বিএনপি দলীয় সাংসদ উকিল আবদুস সাত্তার ও হারুনুর রশিদ সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন।

আবদুস সাত্তার বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলাপ করে তাঁর সম্মতিতে সংসদে এসে শপথ নিয়েছি।’

আরেক সদস্য হারুনুর রশিদ বলেন, দলীয় সিদ্ধান্তেই তাঁরা সংসদে এসেছেন। তাঁদের ওপর সরকারের চাপ ছিল, তবে সে কারণে তাঁরা সংসদে আসেননি। তিনি বলেন, সংসদে তাঁরা নতুন নির্বাচন দাবি করবেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তি চাইবেন।

হারুনুর রশীদ বলেন, ‘আমরা দলীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিলাম। আসলে এ সংসদ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছে না। জনগণের ভোটে এ সরকার নির্বাচিত হয়নি। ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন হয়নি। যে কারণে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এ নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। নির্বাচনে যে ফল মানুষ প্রত্যাশা করেছিল, তা পায়নি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা শপথ নিয়েছি। ভোট চুরির মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে। চুরি করে ক্ষমতায় আসার জন্য সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে। এটিকে ঠিক করার দায়িত্ব সরকারের। কীভাবে জনগণের প্রতিনিধির মাধ্যমের সরকার গঠন করা যায় সে দায়িত্ব সরকারের।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘বিশেষ করে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, নিম্ন আদালতের ফরমায়েশি রায়ে তাঁকে কারাগারে রাখা হয়েছে। অথচ দেশের ফাঁসির আসামি, মাদকের আসামির মতো জঘন্য আসামিরা জামিনে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাই আমরা আশা করব সরকার অবিলম্ব খালেদা জিয়াকে জামিনে মুক্তি দেবে এবং তাঁর সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করবে।’ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সম্মতি থাকলে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আসেননি কেন? এ প্রশ্নের জবাবে হারুনুর রশীদ বলেন, ‘মহাসচিবের বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। এ বিষয়ে তাঁকেই জিজ্ঞেস করেন, তিনি ভালো বলতে পারবেন।’

দলের সম্মতি থাকলে শপথ নেওয়ার পর আপনাদের সদস্য জাহিদুর রহমানকে দল বহিষ্কার করেছে কেন? এ প্রশ্নের জবাবে হারুনুর রশীদ বলেন, ‘আগে শপথ নেওয়ায় তিনি আজ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। এখন দল হয়তো তার ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে। জাহিদুর রহমান হয়তো লিখিতভাবে ক্ষমা চাইবেন। দল বিবেচনা করবে।’


আপনারা কি পাঁচ বছরের জন্য এই সংসদকে বৈধতা দিতে এসেছেন? এ প্রশ্নের জবাব তিনি বলেন, ‘আমরা এই সংসদকে বৈধতা দিতে আসিনি। দেশে আইনের শাসন নাই, সুশাসন নাই, দেশে অরাজকতা চলছে, ১৭ কোটি মানুষকে জিম্মি করে রাখা হয়েছে- এই বিষয়গুলো তুলে ধরার জন্য আমরা সংসদে এসেছি।’

আপনারা কি মনে করছেন মির্জা ফখরুল সাহেবও শপথ নেবেন? জবাবে হারুন বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি মন্তব্য করব না।’

অবশ্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় প্রথম আলোকে বলেছেন, দলের সিদ্ধান্ত সংসদে না যাওয়ার। এর কোনো পরিবর্তন হয়েছে কি না, তা বিএনপির মহাসচিব বলতে পারবেন। গয়েশ্বর বলেন, দলের সিদ্ধান্ত যদি শপথ নেওয়ারই হতো তাহলে তো মহাসচিব শপথ না নিয়ে দলের সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করেছেন।