ভানুয়াতু দ্বীপে আটকা উজিরপুরের ১১ যুবক

সুখ নামের সোনার হরিণ ধরার আশায় প্রতারকের খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব হয়ে দ্বীপরাষ্ট্র ভানুয়াতুতে আটকা আছেন বরিশালের উজিরপুর উপজেলার ১১ যুবক। প্রায় ২ বছর ধরে মানবেতর জীবনযাপন করা যুবকদের দেশে ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ সরকারের সহায়তা চেয়েছেন পরিবার ও স্বজনেরা।

আটকা পড়া যুবক, তাদের পরিবার ও সংশ্লিষ্টরা জানান, উজিরপুরের মুন্ডপাশা, জয়শ্রী, পূর্ব মুন্ডপাশা, শিকারপুরসহ বিভিন্ন এলাকার ভুক্তভোগী যুবকেরা দেশে ব্যবসা করে বা মজুর খেটে মোটামুটি ভালো ছিলেন। তাদের অস্ট্রেলিয়া নিয়ে বিক্রয় প্রতিনিধির কাজ দেওয়ার স্বপ্ন দেখান বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার পলাশ হাওলাদার (২৭)। যুবকেরা পলাশ হাওলাদাররের লোভনীয় ফাঁদে পড়ে ভিটে-মাটি বিক্রি করে ৮/১০ লাখ টাকা দিয়ে প্রতারক পলাশের প্রস্তাবে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমান।

উজিরপুর উপজেলার মুন্ডপাশা গ্রামের আল আমিন অভিযোগ করে বলেন, ‘মুন্ডপাশা বাজারে আমার দোকান ছিল। ব্যবসা করে কোনোমতে দুমুঠো খেয়ে-পরে দিন কাটত। পলাশের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পরে সে আমাকে ভালো বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখায়। ৮ লাখ টাকা দিলে আমাকে অস্ট্রেলিয়া নিয়ে বিক্রয় প্রতিনিধির চাকরি দেওয়ার কথা জানায়। লোভে পড়ে পৈতৃক ভিটা মাটি বিক্রি করে ২০১৭ সালে তাকে ৮ লাখ টাকা দিই।’ বর্তমানে তিনি অর্ধহারে-অনাহারে অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

দ্বীপ দেশে আটকে পড়া উজিরপুর উপজেলার জয়শ্রী গ্রামের আমির হোসেন হাওলাদারের (৩২) অভিযোগ, পলাশ হাওলাদার প্রতারণার মাধ্যমে লোভনীয় ফাঁদে ফেলে বাংলাদেশের ১০৩ জনকে ভানুয়াতু নিয়ে তাল বাহানা শুরু করেন। তার মধ্যে তাঁরা উজিরপুরের ১১ জন আছেন।

ভানুয়াতু হিউম্যান রাইটস কোয়ালিশন নামের সংগঠনের সহায়তায় ভানুয়াতু পুলিশের কাছে পলাশ হাওলাদারসহ চক্রের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন যুবকদের পরিবারের সদস্যরা। পরে পুলিশ পলাশ হাওলাদার ও এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে। দুই মাস ধরে পলাশ কারাগারে থাকায় অভিযোগের ব্যাপারে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পলাশ হাওলাদারের বাবা হারুন অর রশিদ এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান।