পাঁচ আসামির বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর

নুসরাত জাহান
নুসরাত জাহান

ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার পাঁচ আসামির বিভিন্ন মেয়াদের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার সকালে ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. জাকির হোসেন এ আদেশ দেন।

ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, মহিউদ্দিন ওরফে শাকিল, শাহাদাত হোসেন শামীম ও জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদকে আজ আদালতে হাজির করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়। আদালত ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন ও মহিউদ্দিন ওরফে শাকিলকে পাঁচ দিন করে এবং শাহাদাত হোসেন শামীম ও জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদকে দুই দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মো. শাহ আলম বলেন, আসামি ইফতেখার, ইমরান ও মহিউদ্দিনকে আদালতে হাজির করে নুসরাত হত্যার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়। আদালত তাদের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। শাহাদাত ও জাবেদকে আদালতে হাজির করে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত দুদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে গত ২৫ এপ্রিল ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে শাহাদাত হোসেন শামীমকে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানান। ওই আবেদনের ভিত্তিতে আদালত তখন তাঁর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। শাহাদাতকে গত ১৩ এপ্রিল ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। ওই দিন সন্ধ্যায় শাহাদাত ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যায় সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।

আর জাবেদ হোসেন ওরফে শাখাওয়াত হোসেন জাবেদের গত ১৩ এপ্রিল প্রথম দফায় ৭ দিনের এবং পরে দ্বিতীয় দফায় আরও তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। জাবেদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।

শাহাদাত ও জাবেদের ওই স্বীকারোক্তিতে জানা যায়, গত ৬ এপ্রিল সকালে পরীক্ষার আগে নুসরাতকে মাদ্রাসার প্রশাসনিক ভবনের ওপর ডেকে নিয়ে যান উম্মে সুলতানা পপি। তৃতীয় তলার ছাদে শামীমসহ চারজন ছিলেন। তাদের তিনজন পুরুষ এবং একজন নারী। পুরুষ সদস্যরা নিজেদের পরিচয় গোপন করার জন্য বোরকা ও হাতমোজা পরেছিলেন। তিন পুরুষ হলেন শামীম, জাবেদ ও জোবায়ের এবং ওই নারীর নাম কামরুন নাহার মণি। তাঁরা নুসরাতের হাত ও পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। বর্তমানে তাঁরা সবাই গ্রেপ্তার। তাঁরা ফেনীর বিচারিক হাকিম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, এ মামলায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদ্দৌলাসহ ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ১৫ জনের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। তাদের মধ্যে অধ্যক্ষসহ ৯ জন নুসরাত হত্যার জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।