ফণীর আতঙ্কে কয়রাবাসী

ঘূর্ণিঝড় ফণী নিয়ে কয়রা সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঘাটাখালী গ্রামের মানুষ চরম আতঙ্কে রয়েছে। কপোতাক্ষ নদের পূর্বপাড়ের এ গ্রামটির বহু মানুষ এখন রাস্তায়। তাঁরা আশঙ্কা করছেন, ঘূর্ণিঝড় ফণী আঘাত হানলে গ্রামের সামনের ছোট্ট বেড়িবাঁধটি ভেঙে যাবে। এতে লোনা পানিতে পুরো এলাকা ভেসে যাবে।

ঘাটাখালী গ্রামের বেড়িবাঁধে দাঁড়িয়ে দেখা যায়, বহু মানুষ উৎকণ্ঠায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন। অনেকে দড়ি দিয়ে ঘর শক্ত করে বেঁধে রাখার চেষ্টা করছেন। অনেকে গরু–ছাগল নিয়ে নিরাপদ জায়গায় চলে যাচ্ছেন।

নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে যাচ্ছে মানুষ। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ।
নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে যাচ্ছে মানুষ। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ।

ঘাটাখালীএলাকা দেখতে এসেছিলেন খুলনা ৬ আসনের সংসদ সদস্য আখতারুজ্জামান। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘চরম আতঙ্কের মধ্যে আছি। সত্যি সত্যি যদি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে, তবে পুরো এলাকা ভেসে যাবে। এ এলাকায় প্রায় ১২ হাজার মানুষ বাস করে।’

ঘাটাখালী এলাকাটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৩-১৪ / ২ পোল্ডারের আওতায়। ১০ বছর আগে ঘূর্ণিঝড় আইলায় এখানে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। সে স্মৃতি এখনো মানুষের মনে গেঁথে আছে। তাই প্রতিটি মানুষ আতঙ্কের মধ্য আছে।

কয়রা শহর খুলনা সদর থেকে সড়ক পথে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণে। ঘূর্ণিঝড় ফণীতে যে কয়টি জনপদ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, এর মধ্যে কয়রা অন্যতম।

ঘূর্ণিঝড় ফণীর হাত থেকে রক্ষায় গৃহপালিত পশুগুলোকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ।
ঘূর্ণিঝড় ফণীর হাত থেকে রক্ষায় গৃহপালিত পশুগুলোকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ।

আজ সকালে প্রথম আলোকে উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিমুল কুমার সাহা বলেন, ‘ফণীর ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। ১২টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। ১১৬টি সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত করা হয়েছে। ৭টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও থানা পুলিশদের নিয়ে আলাদা টিম গঠন করা হয়েছে। নিরাপদ পানি ও খাদ্য মজুত করা হয়েছে। মানুষজনকে সাইক্লোন সেন্টারে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।’

আজ সকালেও ওই এলাকায় রোদ ছিল। এলাকার মানুষ অনেকেই সাইক্লোন সেন্টারে যেতে চাইছিলেন না। প্রশাসন অনেক চেষ্টা করেও তাদের নিতে পারছিলেন না। কিন্তু বেলা সাড়ে ১০টার দিকে আকাশে মেঘ ঘনিয়ে আসতে ও বাতাস বইতে শুরু করেছে। তারপর থেকে পুরো এলাকার চিত্র বদলে গেছে।