কক্সবাজারে ঝোড়ো হাওয়া, পর্যটক সরাতে হিমশিম

প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী ভারতের ওডিশায় আঘাত হানার পর থেকে কক্সবাজারে ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করেছে। আজ বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকাল নয়টার দিকে ওডিশায় আঘাত হানে ফণী। দুপুরের পর থেকে কক্সবাজারে ঝোড়ো হাওয়ার গতি আরও বাড়তে পারে এবং বৃষ্টি শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছে কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তর।

ঝোড়ো হাওয়া ও উত্তাল সাগর উপেক্ষা করে সৈকতে ঘুরছেন পর্যটকেরা। ছবি: সাজিদ হোসেন
ঝোড়ো হাওয়া ও উত্তাল সাগর উপেক্ষা করে সৈকতে ঘুরছেন পর্যটকেরা। ছবি: সাজিদ হোসেন

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ৪ নম্বর বিপদ সংকেত বহাল রয়েছে। এ মুহূর্তে সাগর উত্তাল। বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে তীরে। এর মধ্যেও পর্যটকদের সৈকতে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে। তাঁদের সরাতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। শেষ পর্যন্ত পুলিশ ও পর্যটন পুলিশ এসে পর্যটকদের জোর করে সরিয়ে নেয়। পর্যটক, জেলে ও নিম্নাঞ্চল এবং দ্বীপ এলাকার বাসিন্দাদের দুপুরের পর থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলা হয়েছে।

কুতুবদিয়া, মহেশখালী, সেন্টমার্টিন সহ দ্বীপগুলোর আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বেশ কিছু আশ্রয়কেন্দ্র স্থানীয় প্রভাবশালী লোক এ জেলেদের দখলে ছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রগুলো দখলমুক্ত করে প্রস্তুত করা হয়েছে। ফণীর প্রভাব শুরু হলে দুপুরের পর থেকে সেই আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে লোকজনকে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।

পর্যটকদের নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরে যেতে মাইকিং। ছবি: সাজিদ হোসেন
পর্যটকদের নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরে যেতে মাইকিং। ছবি: সাজিদ হোসেন

কক্সবাজার জেলার ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আফসার প্রথম আলোকে বলেন, ‘জেলার চার লাখ মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার মতো স্থান রয়েছে। আমরা প্রস্তুত আছি।’

স্থানীয় জেলেরা জানান, কক্সবাজার থেকে গভীর সাগরে মাছ ধরতে গিয়েছিল প্রায় এক হাজার নৌকা। বেশির ভাগই ফিরে এসেছে। এখনো ৩০ শতাংশের মতো ফেরেনি। তবে জেলেরা ঘূর্ণিঝড়ের সতর্ক বার্তা সম্পর্কে জেনেছেন। তাঁরা ফিরতে শুরু করেছেন।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের নিবন্ধিত সব জেলেরা নিরাপদ স্থানে চলে এসেছে। এর বাইরে কোনো মাছ ধরার নৌকা সাগরে গিয়ে থাকলে তাঁদের তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে সবাই যেন ফিরে আসে সে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা।’

সাগর উত্তাল হলেও সকালের দিকে সৈকতে পর্যটকদের ভিড় ছিল। পর্যটকদের সৈকত থেকে সরিয়ে নিতে কর্তৃপক্ষকে হিমশিম খেতে হয়। তাঁদের মাইকিং করে নিরাপদে সরে আসতে আহ্বান জানানো হলেও তা আমলে নিচ্ছিলেন না। তাঁদের একদিক থেকে সরিয়ে নেওয়া হলে আরেক দিক দিয়ে গিয়ে সাগরে নেমে পড়তে দেখা যায়। অনেকে ব্যস্ত হয়ে পড়েন ছবি তুলতে। পরে পুলিশ ও পর্যটন পুলিশ জিপ গাড়িতে করে এসে সব পর্যটককে সরিয়ে নেন। সৈকত এলাকা এখন একদম পর্যটকশূন্য।