যানজটের কবলে পড়ে নাকাল নগরজীবন

সিলেট নগরের বিভিন্ন সড়কে প্রতিদিন লেগে থাকে তীব্র যানজট। যানজটে নাকাল নগরবাসী। গতকাল বিকেলে নগরের জিন্দাবাজার এলাকায়।  প্রথম আলো
সিলেট নগরের বিভিন্ন সড়কে প্রতিদিন লেগে থাকে তীব্র যানজট। যানজটে নাকাল নগরবাসী। গতকাল বিকেলে নগরের জিন্দাবাজার এলাকায়। প্রথম আলো

নালা-নর্দমার উন্নয়নকাজ আর মূল সড়ক-সংলগ্ন নর্দমার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানের কারণে তীব্র যানজটে ভুগছে সিলেট নগরবাসী। দীর্ঘক্ষণ যানজটের কবলে পড়ে বসে থাকার বিরক্তিকর অভিজ্ঞতা এড়াতে অনেকেই হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছান। গতকাল রোববার সকাল দশটা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত যানজটে স্থবির ছিল জনজীবন। বিকেলেও নগরের কিছু স্থানে ছিল যানজট।

সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রায় সব প্রধান সড়কেই কমবেশি যানজট। এক যানবাহনের পেছনে আরেক যানবাহন দাঁড়িয়ে ছিল। অনেকে অতিষ্ঠ হয়ে গাড়ি থেকে নেমে গন্তব্যের দিকে হাঁটা ধরেছিলেন। ফণীর প্রভাব কাটিয়ে গতকাল রোদ ঝলমলে আকাশ ছিল। তাই স্থবির হয়ে থাকা যানবাহনে বসে অনেকেই ঘেমেছেন। যানজটের কারণে ফুটপাতেও পথচারীদের ভিড় বাড়ে। গত দুই দিনের বৃষ্টিপাতে ফুটপাত কাদাপানিতে সয়লাব থাকায় পথচারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

হুমায়ুন রশীদ চত্বর এলাকার বাসিন্দা চল্লিশোর্ধ্ব নাজিমুল ইসলাম বলেন, ‘হুমায়ুন রশীদ চত্বর থেকে রিকশায় করে দেড় ঘণ্টায় বন্দরবাজার এলাকায় পৌঁছেছি। অথচ এ দূরত্ব আমার ২০ মিনিটের মধ্যে পৌঁছার কথা। দুর্ভোগের চূড়ান্ত সীমা দেখলাম।’ তিনি জানান, প্রধান সড়ক ছাড়িয়ে যানজটের প্রভাব পড়ে পার্শ্ববর্তী সব এলাকার সংযোগ সড়কগুলোয়। গন্তব্যে পৌঁছাতে তাই গতকাল কমবেশি সবাইকে ধরাবাঁধা সময়ের দ্বিগুণ-তিন গুণ সময় লেগেছে।

নর্দমা পরিষ্কার করার জন্য সড়কের পাশে তুলে রাখা হয়েছে ময়লা। এ কারণে সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের। গতকাল বিকেলে নগরে জিন্দাবাজার-রারুতখানা সড়কে।  প্রথম আলো
নর্দমা পরিষ্কার করার জন্য সড়কের পাশে তুলে রাখা হয়েছে ময়লা। এ কারণে সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের। গতকাল বিকেলে নগরে জিন্দাবাজার-রারুতখানা সড়কে। প্রথম আলো

নগরের অতি গুরুত্বপূর্ণ জিন্দাবাজার-বারুতখানা সড়কের ডান দিকে কয়েক মাস ধরেই নর্দমা প্রশস্তকরণ ও নির্মাণের কাজ চলছে। ফলে পুরোনো নর্দমা খুঁড়ে মাটি ও ইটের সুরকি মূল সড়কের এক পাশে ফেলে রাখা হয়েছে। রাখা হয়েছে নির্মাণসামগ্রীও। এর মধ্যে গতকাল থেকে সড়কের বাঁ দিকের নর্দমার ঢাকনা সরিয়ে শুরু হয়েছে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। এসব বর্জ্য মূল সড়কে রাখা হচ্ছে। সড়কের এক পাশে পরিচ্ছন্নতা অভিযান এবং অন্য পাশে নির্মাণকাজ চলায় পুরো সড়কটি সরু হয়ে গেছে। এতে ওই সড়কে গতকাল সকাল থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত সারাক্ষণ তীব্র যানজট ছিল।

সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল শাখা জানিয়েছে, বৃষ্টিপাত হওয়ায় গত কয়েক দিন নগরে চলমান উন্নয়নকাজ করা সম্ভব হয়নি। তাই গতকাল রোদ থাকায় নগরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাসহ প্রায় সব ওয়ার্ডেই কমবেশি কাজ শুরু হয়েছে। নগরের ২৭টি ওয়ার্ডে এই মুহূর্তে প্রায় ৮০ কোটি টাকার উন্নয়নকাজ চলছে।

সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, ‘উন্নয়নকাজ আর পরিচ্ছন্নতা অভিযান চলমান থাকার কারণে যানজট কিছুটা বেড়েছে। এ ছাড়া আজ (গতকাল) কর্মসপ্তাহ শুরুর দিনও ছিল। উন্নয়নকাজ শেষ হয়ে গেলে নগরে যানজট অনেকটাই কমে আসবে।’ যানজটের স্থায়ী সমাধানের জন্য অবৈধ স্ট্যান্ড ও ফুটপাত থেকে দখলদার উচ্ছেদে সিটি কর্তৃপক্ষ উদ্যোগী হবে বলেও তিনি জানান।