স্বামীর 'দ্বিতীয় বিয়ের' খবরে আত্মহত্যা!

আইনজীবী সাবিকুন্নাহার
আইনজীবী সাবিকুন্নাহার

স্বামীর ‘দ্বিতীয় বিয়ের’ খবরে কীটনাশক পান করে এক আইনজীবী আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার বেলা একটার দিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাবিকুন্নাহার ওরফে রূপা (৩২) নামের ওই আইনজীবী মারা যান। দ্বিতীয় বিয়ের কথা অস্বীকার করেছেন স্বামী তমাল মাহমুদ।

সাবিকুন্নাহার মাগুরা জেলা জজ আদালতে জুনিয়র আইনজীবী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার নবীর হোসেন মোল্লার মেয়ে। মাগুরা শহরের পারনান্দুয়ালী গ্রামের ব্যবসায়ী তমাল মাহমুদের সঙ্গে ১২ বছর আগে বিয়ে হয় তাঁর।

সাবিকুন্নাহারের পরিবারের অভিযোগ, স্বামী তমালের দ্বিতীয় বিয়ের খবর মেনে নিতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন সাবিকুন্নাহার। গতকাল ভোরে পারনান্দুয়ালী গ্রামে নিজ বাসায় তিনি কীটনাশক পান করেন। দুপুরে তাঁর মৃত্যু হয়। 


সাবিকুন্নাহারের চাচাতো ভাই মইনুল ইসলামের তথ্যমতে, দুই মাস আগে সাবিকুন্নাহার জানতে পারেন, পাশের বাড়ির একটি মেয়েকে বিয়ে করেছেন তমাল। প্রথমে এ বিয়ের কথা অস্বীকার করলেও গত সপ্তাহে স্বীকার করেন তমাল। এরপর স্বামী-স্ত্রীর বিরোধ চরমে পৌঁছায়। বিরোধ মেটাতে চাচাতো ভাই মইনুল ইসলামসহ সাবিকুন্নাহারের পরিবারের লোকজন আসেন মাগুরায়।

মইনুল ইসলাম বলেন, গত রোববার গভীর রাত পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হলেও কোনো সমাধান আসেনি। গতকাল ভোরে বাড়ির সবাই যখন ঘুমিয়ে ছিলেন, তখন সাবিকুন্নাহার কীটনাশক পান করেন। অসুস্থ অবস্থায় প্রথমে তাঁকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় পর তাঁকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বেলা একটার দিকে সাবিকুন্নাহারের মৃত্যু হয়। তিনি জানান, গতকাল রাতে সাবিকুন্নাহারের মরদেহ বাবার বাড়ি গোপালগঞ্জে দাফন করা হয়।

স্ত্রীর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে তমাল মাহমুদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বিয়ের অনেক দিন পরও সন্তান না হওয়ায় তাঁর স্ত্রী হতাশ ছিলেন। তবে পাশের বাড়ির মেয়েকে বিয়ে করা বা কোনো ধরনের সম্পর্কে জড়ানোর কথা অস্বীকার করেন তিনি। এটিকে গুজব বলে দাবি করেন তিনি।

পাশের বাড়ির ওই মেয়েটির মা হোসনে আরা বেগম জানান, তাঁর মেয়ে বিবাহিত এবং এক সন্তানের মা। স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় ছয় মাস হলো বাবার বাড়িতে এসে থাকছেন। তিনি জানান, নিজেদের জায়গা-জমি না থাকায় তাঁরা তমালদের জায়গায় বাস করেন।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।