ভূঞাপুরে ব্যস্ত রাস্তায় বাস টার্মিনাল

বাস টার্মিনাল থাকলেও সেখানে বাস যায় না। ভূঞাপুর উপজেলা সদরের ব্যস্ত রাস্তায় গড়ে উঠেছে অবৈধ বাসস্ট্যান্ড। ছবি: প্রথম আলো
বাস টার্মিনাল থাকলেও সেখানে বাস যায় না। ভূঞাপুর উপজেলা সদরের ব্যস্ত রাস্তায় গড়ে উঠেছে অবৈধ বাসস্ট্যান্ড। ছবি: প্রথম আলো

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে রয়েছে নির্ধারিত বাস টার্মিনাল। কিন্তু সেখানে কোনো বাস থামে না। উপজেলা পরিষদের কাছে ব্যস্ততম রাস্তাটি ‘অবৈধ বাসস্ট্যান্ড’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে সেখানে সব সময় যানজটের সৃষ্টি হয়। তাতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় সাধারণ মানুষের।

ভূঞাপুর বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি সূত্র জানায়, উপজেলায় তাদের সমিতিভুক্ত ৪৮টি বাস-মিনিবাস রয়েছে। প্রতিদিন গাড়িগুলোর মধ্যে অন্তত ৩০টি ঢাকা ও টাঙ্গাইল রুটে চলাচল করে। এ ছাড়া সাড়ে তিন শতাধিক সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভূঞাপুর থেকে বিভিন্ন রুটে চলাচল করে। উপজেলা পরিষদের কাছে বাজার রোডের মোড় থেকে এসব যানবাহন চলে। ফলে প্রতিনিয়ত সেখানে সৃষ্টি হয় যানজটের। যানজট নিরসনের লক্ষ্যে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়কে পৌরসভার পাশে একটি পরিত্যক্ত ভূমি ভরাট করে বাস টার্মিনাল স্থাপন করা হয়। সেখানে বাস টার্মিনাল নেওয়ার পর বাজার সড়কের মোড় ও উপজেলার সামনে যানজট কমে যায়। কিন্তু ২০০৯ সালে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকেরা নতুন টার্মিনাল ছেড়ে আবার বাজার রোডের মোড় ও উপজেলা পরিষদের সামনে থেকে বাস চালাতে শুরু করেন, যা এখনো অব্যাহত আছে।

গত রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা পরিষদের সামনে থেকে পশ্চিম দিকে সারিবদ্ধভাবে অন্তত ১০টি বাস থেমে আছে। বাসগুলো রাস্তার অন্তত সিকিভাগ দখল করে রয়েছে। বাজার সড়কের মোড় থেকে দুটি বাস ঢাকার যাত্রী তুলছে। এলাকাজুড়ে অন্তত ৫০টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে আছে। এতে গোবিন্দাসী যমুনা ঘাট সড়ক ও ভূঞাপুর বাজার সড়কে সৃষ্টি হয়েছে যানজট।

ভূঞাপুর ইব্রাহিম খাঁ কলেজের স্নাতক শিক্ষার্থী জাহিদ হোসেন বলেন, এভাবে বাস চলার কারণে এখানে প্রতিদিনই যানজটের সৃষ্টি হয়।

পার্শ্ববর্তী গোপালপুর উপজেলার হেমনগর গ্রামের বাদল মিয়া বলেন, ঢাকা বা টাঙ্গাইল থেকে গোপালপুর ও সরিষাবাড়ি উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষ এ পথ দিয়ে যাতায়াত করে। ভূঞাপুরের এই অবৈধ বাসস্ট্যান্ডের কাছে যানজটে পড়ে প্রতিদিন দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

ভূঞাপুরের একাধিক জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ও পেশাজীবীর সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, তাঁরা ব্যস্ততম এ সড়ক থেকে অস্থায়ী বাসস্ট্যান্ড সরিয়ে নেওয়ার জন্য উপজেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভায় একাধিকবার দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে কোনো ফল পাওয়া যায়নি।

ভূঞাপুর বাজার বণিক সমিতির সভাপতি নুরুজ্জামান চকদার বলেন, বাস টার্মিনাল থাকার পরেও পরিবহনমালিকেরা সেটা ব্যবহার করছেন না। এ টার্মিনাল চালুর ব্যাপারে কারও কোনো উদ্যোগও নেই।

উপজেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশীদ দাবি করেন, ২০০৭ সালে যেখানে টার্মিনাল করা হয়েছিল, সেখানে যাত্রীরা যেতে চান না। তাই ২০০৯ সাল থেকে পুনরায় উপজেলা পরিষদের কাছ থেকেই বাস চালানো হচ্ছে। তবে যানজট যাতে না হয়, সে জন্য পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সমিতির পক্ষ থেকে চারজন কর্মী নিয়োজিত থাকেন।

ভূঞাপুর পৌরসভার মেয়র মাসুদুল হক জানান, উপজেলার শিয়ালকোল এলাকায় জমি দেখা হয়েছে। সেখানে বাস টার্মিনাল স্থাপনের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।